পলাশডিহা ময়দানে মন্ত্রী মলয় ঘটক। নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগে পলাশডিহা ময়দানে বিজেপি দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের উপস্থিতিতে ‘যোগদান মেলা করেছিল। সেই মাঠেই রবিবার সভা করলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মলয় ঘটক। এলাকাবাসীর একাংশের মতে, তৃণমূল ‘পাল্টা’ সভা করল বিজেপির। যদিও, তৃণমূল নেতৃত্ব তা স্বীকার করেননি। তবে, ঘটনাচক্রে, তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপিকে বিঁধতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের ওই দিনের সভার কথা নানা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন।
মলয়বাবু তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বিজেপির সভার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘সে দিন যা লোক হয়েছিল আজ তার চার গুণ লোক এসেছেন। তা-ও সে দিন যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদেরও টাকা দিয়ে আনা হয়েছিল।’’ এ দিনের সভা থেকে মলয়বাবু বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে গিয়ে শ্রমক্ষেত্রের প্রসঙ্গই তুলে ধরেন। তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘বিক্রি’, খনিতে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের অভিযোগ তুলে বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নামার ডাকদেন কর্মীদের।
পাশাপাশি, বিজেপির ওই দিনের যোগদান মেলায় দলে যোগ দিয়েছিলেন রাজেশ (ওরফে রাজু) ঝা। ঘটনাচক্রে, তৃণমূল ও পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, বর্তমানে হোটেল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত রাজু বেআইনি কয়লার কারবারে অভিযুক্ত ছিলেন। আছেন। মামলাও চলছে। যদিও দিলীপবাবু প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘যেই বিজেপিতে যোগ দিলেন, তাঁরা মাফিয়া হয়ে গেলেন? ওঁরা মাফিয়া হয়ে থাকলে তৃণমূল সরকার এত দিন তাঁদের গ্রেফতার করেনি কেন?’’ এ দিনের সভাতেও এই চাপানউতোরের রেশ দেখা গিয়েছে। কারও নাম না করে শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি কয়লা মাফিয়াদের দলে নিয়েছে বলে আপনারা ভয় পাবেন না। বিধানসভা নির্বাচনে যেন বিজেপি নেতারা এলাকায় ঢুকতে না পারেন। প্রতিরোধ করতে হবে আপনাদের।’’ পাশাপাশি, মলয়বাবু বিজেপির জেলার ন’টি আসনে জয়লাভের সাম্প্রতিক দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা ফল বেরোলে দেখবেন, ফল ঠিক উল্টো হয়েছে।’’ মলয়বাবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন।
তবে, মলয়বাবুর এ দিনের সভা ও নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা এখন অবান্তর সব কথা বলছেন। আমাদের সভার জনসমাগমের সঙ্গে এ দিন ওদের সভার কোনও তুলনা চলে না।’’
ঘটনাচক্রে, এ দিনের সভায় হাজির ছিলেন না তৃণমূলের অন্যতম জেলা কো-অর্ডিনেটর বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল এবং দুর্গাপুর পুরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর। অনুপস্থিতির কারণ প্রসঙ্গে মলয়বাবু বলেন, ‘‘বিশ্বনাথ দুর্গাপুরে নেই। তাই তিনি আসেননি। দুর্গাপুরে থাকলে নিজেই আসতেন। কাউন্সিলরেরা যাঁরা আসেননি, তাঁদের নিশ্চয়ই কিছু না কিছু সমস্যা ছিল।’’