TMC

রাস্তা হয়নি গ্রামে, তৃণমূলের পতাকা খুলে দলীয় অফিস ফাঁকা করলেন কর্মীরা, সরল মমতার ছবিও

সিঙ্গুরে মুখ্যমন্ত্রীর পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনই দলীয় অফিস ফাঁকা করলেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির নলসাঁড়া গ্রামের তৃণমূল কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৯:২৩
Share:

মেমারি ১ নম্বর ব্লকের নলসাঁড়া গ্রামে তৃণমূলের কার্যালয় থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র সরিয়ে তা গুটিয়ে দিলেন দলীয় কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

শাসকদলের নেতাদের আশ্বাসই সার। আশপাশের গ্রামে সড়ক তৈরি হলেও তাঁদের দেবীপুরে রাস্তা তৈরি হয়নি। যার জেরে অফিসকাছারি বা স্কুল-কলেজে যেতে নিত্য সমস্যায় পড়েন। ক্ষোভে তৃণমূলের কার্যালয় থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র সরিয়ে তা গুটিয়ে দিলেন দলীয় কর্মীরা। নামিয়ে ফেলা হল দলীয় পতাকা। এমনকি, সরিয়ে ফেলা হল দলের সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও। সিঙ্গুরে মুখ্যমন্ত্রীর পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনই এ হেন পদক্ষেপ পূর্ব বর্ধমানের মেমারির নলসাঁড়া গ্রামের তৃণমূল কর্মীদের। যদিও তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে শীঘ্রই রাস্তা তৈরির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নলসাঁড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মমতাজ মালিক, হারুণ শেখদের দাবি, দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আশপাশের সব গ্রাম রাস্তা পেলেও হা-পিত্যেশ করেই বসে রয়েছেন তাঁরা। এর জেরে দেবীপুরের বাসিন্দাদের রেলস্টেশনে বা স্কুলে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে দাবি, মেমারি ১ নম্বর ব্লকের নলসাঁড়া গ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিসে দলীয় কর্মীরা নিয়মিত বসতেন। দলের নানা বিষয়ে আলোচনাও চলত। এলাকায় মেমারি বিধানসভার বিধায়ক তথা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্যের প্রভাবও যথেষ্ট। এই হেভিওয়েট নেতার এলাকাতেই রাস্তার অভাবে শাসকদলের কর্মীরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল মঙ্গলবার। তৃণমূলের অফিস থেকে দলীয় পতাকা খোলা ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ দলের যাবতীয় সামগ্রী সরিয়ে নিলেন কর্মীরা। এমনকি, ভোট বয়কটের হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা। গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ মালিক বলেন, ‘‘অনেক দিন থেকে শুনে আসছি, রাস্তা হবে। নেতারাও তা-ই বলে গিয়েছেন। আর কবে রাস্তা হবে?’’

Advertisement

শাসকদলের কর্মীদের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। দলের বর্ধমান সদর জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের দাবি, ‘‘মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন তৃণমূল নেতারা। গ্রামে রাস্তা এবং পানীয় জল নেই। অথচ কেন্দ্রের নানা প্রকল্পের টাকা আসছে। সে টাকা হয়তো কাটমানি খেয়ে নিচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। পথশ্রী নয়, এ সব বিশ্রী ব্যাপার!’’ যদিও রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় রাস্তা হবেই। অন্য সব জায়গায় হচ্ছে। হয়তো কোনও টেকনিক্যাল কারণে এ প্রকল্প বাতিল হয়েছে। অনেক দিন থেকেই এখানে রাস্তা হওয়ার কথা। অনেকে সে কথাও দিয়েছেন। তা নিয়ে অভিমান হতেই পারে। যাঁরা দল করেন, তাঁরা দলই করবেন। ছাড়বেন না।’’ অন্য দিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহসভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘রাস্তার কাজ শুরু হচ্ছে। সব জায়গাতেই রাস্তা হবে। মান-অভিমান হয়ে থাকলে আমরা কথা বলে সব মিটিয়ে নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন