নামে বিজয়া সম্মিলনী। তাকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বার্তা দেওয়া হচ্ছে কর্মীদের। কাটোয়া, কালনা থেকে বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের এই সব সভায় নেতারা কর্মীদের বলছেন, ‘ঐক্যবদ্ধ’ হয়ে পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে নামতে হবে।
রবিবার ভাতারেও এক বিজয়া সম্মিলনীতে একই রকম বার্তা দিলেন নেতারা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের পুরনো ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফের তাঁদের সামনে আনার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে এমন নানা সভায়। সদ্য দলত্যাগী মুকুল রায়ের সঙ্গে জেলার কিছু নেতা যোগাযোগ রাখছেন বলে তাঁদের কাছে খবর রয়েছে, সভায় দাবি করছেন নেতারা।
এ দিন বিকেলে ভাতারে বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলের উদ্যোগে অরাজনৈতিক ভাবে প্রকাশ্য বিজয়া সম্মিলনী হয়। সেখানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সরকারের উন্নয়ন ও সম্প্রীতির কথা তুলে পঞ্চায়েত ভোটে ‘ঐক্যবদ্ধ’ থাকার কথা বলেন। শনিবার জেলায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে স্বপনবাবু বলেন, ‘‘মানুষকে বাদ দিয়ে পঞ্চায়েত দখলের কথা ভাবলে ভুল হবে। মানুষের জন্য রাজ্য সরকার এত প্রকল্প করেছে, সেখানে অন্য কিছু ভাবতে হবে কেন?’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রার্থী বাছাই নিয়ে গোলমালের আশঙ্কা করছেন নেতৃত্ব। পঞ্চায়েতের দখল নিতে গিয়ে দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়, নেতা-কর্মীরা যাতে এমন কিছু না করেন সে জন্যই জেলা সভাপতি দলীয় মঞ্চ থেকে ওই বার্তা দেন বলে দলের একাংশের ধারণা।
ওই সব সম্মেলনে সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও পড়ুয়াদের বৃত্তিদান প্রকল্পের সুবিধা মিলছে না বলে সরব হয়েছেন অনেকে। আবার গীতাঞ্জলি প্রকল্পেও জেলায় গতি নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। স্বপনবাবু ওই সব প্রকল্পের সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের সদস্যদের উদ্যোগী হতে বলেন। দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রতিটি বুথে পুরনো কর্মীদের নিয়ে বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার কথা হয়েছে। তাঁরা উন্নয়নের চাহিদা ও তালিকা তৈরি করবেন।’’
দলের সহ-সভাপতি বনমালী হাজরা থেকে রাজ্য স্তরের নেতা আবু আয়েশ মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘দলের ভিতর মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে তা ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটে নামতে হবে।’’ জেলার ২১৫টির মধ্যে ২১৩টি পঞ্চায়েত ও ২৩টি পঞ্চায়েত সমিতিই তৃণমূলের দখলে।
এ দিনই বর্ধমানে একটি অনুষ্ঠানে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সন্ত্রাস করে তৃণমূল বুথ দখল করে রয়েছে। এ বার মহিলারা রাস্তায় নেমে তার প্রতিরোধ করবেন।’’
এ দিনই পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড় গণেশচন্দ্র তাঁতকাপড় হাটে আয়োজিত তৃণমূলের মহিলা সম্মেলনে যোগ দিয়ে এখন থেকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার পরামর্শ দেন স্বপনবাবু। সেখানেও সরকারি নানা প্রকল্পের সুফল প্রচারের নির্দেশ দেন তিনি। ছিলেন পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক, মহিলা তৃণমূলের জেলা সভাপতি তৃষ্ণা সরকার, কার্যকরি সভাপতি আরতি খান প্রমুখ।