জল প্রকল্প বাঁচাতে খনন দামোদরে

বছরের পর বছর একই সমস্যায় ভোগেন শহরবাসী। গরমে জলের তীব্র সঙ্কট আসানসোল শিল্পাঞ্চলের মানুষের প্রতি বছরের সঙ্গী। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার কালাঝরিয়া প্রকল্পের জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোয় উদ্যোগী হলেন আসানসোল পুরসভা কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৬ ০০:২৫
Share:

তৈরি হচ্ছে গ্যালারি। আসানসোলে দামোদরে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

বছরের পর বছর একই সমস্যায় ভোগেন শহরবাসী। গরমে জলের তীব্র সঙ্কট আসানসোল শিল্পাঞ্চলের মানুষের প্রতি বছরের সঙ্গী। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার কালাঝরিয়া প্রকল্পের জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোয় উদ্যোগী হলেন আসানসোল পুরসভা কর্তৃপক্ষ। এর জন্য দামোদরে কয়েকটি গ্যালারি খননের কাজ শুরু হয়েছে। সামনের মাসেই তা শেষ করে পুরোমাত্রায় জল সরবরাহ করা যাবে বলে দাবি পুরসভার।

Advertisement

অনাবৃষ্টির কারণে দামোদরের জলস্তর অনেক নীচে নেমে গিয়েছে। ফলে, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ধরে রাখা ও সরবরাহ করা যাচ্ছে না আসানসোল পুরসভার তত্ত্বাবধানে থাকা কালাঝরিয়া ও ডিহিকা জল প্রকল্প দু’টি থেকে। এই পরিস্থিতিতে শহরে জলের পর্যাপ্ত চাহিদা মেটাতে হিমসিম খাচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সে কারণেই বিকল্প পথে প্রকল্প দু’টির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ হয়েছে।

পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় জানান, ইঞ্জিনিয়ারদের পরামর্শ মতো প্রথমে কালাঝরিয়া প্রকল্পটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ হয়েছে। কী সেই উদ্যোগ? প্রকল্পটির দায়িত্বে থাকা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল জানান, নদীবক্ষে গ্যালারি তৈরি করে পাইপ বসিয়ে জল একটি সংগ্রাহক কুয়োয় তোলা হবে। পরিভাষায় এই পদ্ধতিটিকে ‘ইনফ্লেটেশন গ্যালারি’ বলা হয়। এই পদ্ধতিতে নদী থেকে ১৪ ফুট নীচে পাইপ বসিয়ে জল টেনে তোলা হবে। ফলে, অনাবৃষ্টি বা অন্য কোনও কারণে নদীর স্বাভাবিক জলস্তর কমে গেলেও প্রকল্পটির জলধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। এই পদ্ধতিতে পুরোপুরি কাজ শুরু করলে কালাঝরিয়া প্রকল্পের জলধারণ ক্ষমতা প্রায় চার মিলিয়ন গ্যালন বেড়ে যাবে বলে ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি। মেয়র পারিষদ পূর্ণশশীবাবু জানান, গ্যালারিটি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় এক কোটি টাকা। আগামী ১০ বছর সেটি খুব ভাল ভাবে কাজ করতে পারবে। পরে তা ফের সংস্কার করতে হবে।

Advertisement

আসানসোল-রানিগঞ্জ খনি এলাকায় এমনিতেই ভূগর্ভস্ত জলের স্তর অনেক নীচে থাকে। গত ৯ মাসে কোনও বৃষ্টি না হওয়ায় নদীর জলস্তরও নেমে গিয়েছে। ডিভিসির মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারের জলস্তর অনেক নীচে নেমে গিয়েছে। ফলে, সেখান থেকেও জল ছাড়া হচ্ছে না। এ দিকে দামোদরের উপরে নির্ভরশীল আসানসোল পুরসভার কালাঝরিয়া ও ডিহিকা প্রকল্প দু’টি পর্যাপ্ত জল না পাওয়ায় সঙ্কটে পড়েছে। সব মিলিয়ে, শিল্পশহরে প্রবল পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। শহরবাসীর প্রয়োজন প্রতিদিন আট কোটি লিটার জল। তা সরবরাহ করা এখন রীতিমতো কঠিন হয়ে পড়েছে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে তাঁদের আশা, কালাঝরিয়ার বিকল্প পদ্ধতিটি চালু হয়ে গেলে সমস্যা অনেক মিটে যাবে, খানিকটা নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। ইতিমধ্যে বর্ষা নেমে গেলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না, আশায় বাঁচছেন পুর-কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন