আমকোলায় বিজেপি কর্মীদের মারে অভিযুক্ত তৃণমূল, জখম ৭

এলাকা দখল নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হলেন সাত জন। রানিগঞ্জের আমকোলা কোলিয়ারি এলাকায় সোমবার সকালে এই গোলমাল বাধে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে হামলার অভিযোগ জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৫
Share:

বাঁ দিকে, তখন চলছে গোলমাল। উপরে, হাসপাতালে জখম। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকা দখল নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হলেন সাত জন। রানিগঞ্জের আমকোলা কোলিয়ারি এলাকায় সোমবার সকালে এই গোলমাল বাধে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে হামলার অভিযোগ জানিয়েছে। ছ’জনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

Advertisement

আমকোলা কোলিয়ারির কর্মী ইন্দ্রদেও মোদী জানান, তিনি মাস চারেক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। চার দিন আগে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের আমকোলা কোলিয়ারি শাখা কমিটি খোলা হয়। তিনি সম্পাদক ও লালজি চৌধুরী সভাপতি হন। ইন্দ্রদেওবাবু অভিযোগ করেন, এ দিন সকালে তাঁর বাড়ির সামনে তৃণমূল আশ্রিত নিয়াজুল খান দলবল নিয়ে এসে জটলা করতে থাকে। মাঝে-মাঝেই তাঁর নাম ধরে নিয়াজুলরা হুমকি দেয়, বিজেপি না ছাড়লে বাড়ি থেকে বেরোতেই দেবে না। বাইরে বেরোলেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ইন্দ্রদেওবাবুর অভিযোগ, “এর আগে সকাল ৮টা নাগাদ ওরা কোলিয়ারি চত্বরে লালজিকে বেধড়ক মারধর করে। ঘণ্টাখানেক ঘরবন্দি থাকার পরে আমি আমাদের দলের দুই কর্মীকে ফোনে বিশদে সব জানিয়ে আমাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করার জন্য বলি।’’

ইন্দ্রদেওবাবু অভিযোগ করেন, ফোন পেয়ে সন্দীপ গোপ-সহ তাঁদের দলের দুই কর্মী তাঁর বাড়িতে আসছিলেন। বাড়ির সামনে পেয়ে নিয়াজুলরা তাঁদের দু’জনকে মারধর করে। ইন্দ্রদেওবাবুর অভিযোগ, ‘‘ওদের বাঁচাতে আমি ঘর থেকে বেরোতেই আমাকে এবং আরও দুই বিজেপি কর্মীকে বেধড়ক পেটায় ওরা।’’ তাঁর দাবি, পুলিশ ও তৃণমূলের রানিগঞ্জ ব্লক সভাপতি সেনাপতি মণ্ডলের সামনেই এমন ঘটনা ঘটে। রানিগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ইন্দ্রদেওবাবু দাবি করেন, ২৭ মার্চ তাঁকে নিয়াজুলবাবু প্রাণে মেরা ফেলার হুমকি দিয়েছিল। তিনি পুলিশ কমিশনারেটের কর্তা ও ইসিএল কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে সবিস্তার অভিযোগ জানান। নিয়াজুল একটি কয়লা কারবার চালাচ্ছে ও এলাকায় অশান্তি পাকাচ্ছে, এমন অভিযোগ জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

তৃণমূল প্রভাবিত কেকেএসসি-র আমকোলা কোলিয়ারি সভাপতি শেরু খানের অবশ্য দাবি, বেশ কয়েক দিন ধরে লালজিরা কিছু বহিরাগতকে নিয়ে এসে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছিল। এ দিন তাঁদের সংগঠনের কোলিয়ারি শাখা সম্পাদক দেবনন্দন পাসোয়ান জানতে চান, বহিরাগতদের কেন আনা হচ্ছে। শেরু খান অভিযোগ করেন, ইন্দ্রদেওরা তখন তাঁকে মারধর করেন। স্থানীয় মানুষজন তা দেখে প্রতিবাদ করলে গণ্ডগোল হয়। নিয়াজুল অবশ্য কোনও গোলমাল পাকানো বা কয়লা কারবার চালানোর কথা মানতে চাননি। ইন্দ্রদেও তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন দাবি করে তিনিও পুলিশ এবং ইসিএল কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে দাবি করেন।

স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের আরও দাবি, ইন্দ্রদেও বাইরে থেকে লোকজন এনে এলাকায় কয়লা কারবারের ফন্দি এঁটেছেন। ইন্দ্রদেও যদিও তা উড়িয়ে দিয়েছেন। ব্লক তৃণমূল সভাপতি সেনাপতিবাবু বলেন, ‘‘হঠাৎ কী কারণে ঝামেলা শুরু হল বুঝতে পারলাম না। পুলিশকে ফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলি।’’ পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন