পুলিশি জুলুম বন্ধের দাবিতে পথ অবরোধ

কৃষ্ণনগর-বর্ধমান রোডে এই অবরোধ চলে ঘণ্টা দুয়েক ধরে। দুপুর দেড়টা নাগাদ ট্রাক মালিকেরা পৌঁছন নাদনঘাট থানায়। সেখানে মন্তেশ্বর ও নাদনঘাট থানার ওসি এবং এসডিপিও (কালনা) শান্তনু চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন কয়েকজন ট্রাক মালিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪৮
Share:

বিক্ষোভে বালির ট্রাকের মালিকেরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

বালির গাড়ির উপরে জুলুম করছেন পুলিশকর্মী, এই অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ট্রাক মালিকেরা। রবিবার মন্তেশ্বর ও নাদনঘাট থানার সীমানাবর্তী এলাকায় কামালপুর রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। পরে নাদনঘাট থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন। পুলিশ কর্তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তাঁরা।

Advertisement

এ দিন কামালপুর সেতুর কাছে সকাল ১১টা নাগাদ অবরোধে বসেন ট্রাকের মালিকেরা। ফেস্টুন লিখে তাঁরা দাবি জানান, ওভারলোডিং বন্ধ করতে হবে, বন্ধ করতে হবে কুপন কার্ড এবং বালির গাড়িতে পুলিশের তোলাবাজি। কৃষ্ণনগর-বর্ধমান রোডে এই অবরোধ চলে ঘণ্টা দুয়েক ধরে। দুপুর দেড়টা নাগাদ ট্রাক মালিকেরা পৌঁছন নাদনঘাট থানায়। সেখানে মন্তেশ্বর ও নাদনঘাট থানার ওসি এবং এসডিপিও (কালনা) শান্তনু চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন কয়েকজন ট্রাক মালিক।

ট্রাক মালিকদের অভিযোগ, রাস্তায় একের পর এক থানার পুলিশকর্মীদের টাকা দিতে হয়। এর জেরে তাঁদের ব্যবসা সঙ্কটে পড়ছে। টাকা দেওয়া শুরু হয় বালির ঘাট থেকে। প্রথমেই বালির দামের সঙ্গে ঘাটে মোটা টাকা কেটে নেওয়া হয়। এর পরে নানা এলাকায় পুলিশকর্মীদের টাকা দিতে হয়। সারা মাস ধরে গাড়ি চালালে আগে মাসিক কার্ড করে নিতে হয়। এক-একটি কার্ডে থাকে থানার চিহ্ন। পুলিশভ্যান পিছু দু’চারশো টাকা দিতে হয় বলে ট্রাক মালিকদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, রাস্তায় পুলিশকে টাকা দিতে না হলে অনেক সস্তায় সাধারণ মানুষ বালি পেতে পারেন।

Advertisement

ট্রাক মালিকদের আরও অভিযোগ, ইদানীং রাতে অতিরিক্ত বালি তুলে বহু গাড়ি পেরিয়ে যাচ্ছে। অথচ, দিনের বেলা নিয়ম মেনে বালি পরিবহণ করলেও টাকা গুণতে হচ্ছে। মন্তেশ্বর থানার এক পুলিশকর্মী গাড়ির চালকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। নাদনঘাট থানায় দাঁড়িয়ে ময়না মণ্ডল, আনারুল মণ্ডল, মহসিন ইসলাম, সত্যজিৎ পাঠকদের অভিযোগ, ‘‘টাকার চাহিদা মেটাতে-মেটাতে আমদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। বৈধ ভাবে ব্যবসা কী উপায়ে করতে পারব, পুলিশকে সেই প্রশ্ন করতে এসেছি।’’

বৈঠক শেষে ট্রাক মালিকদের প্রতিনিধি দলের সদস্য পল্টু পালের দাবি, এসডিপিও তাঁদের জানিয়েছেন, আইন মেনে গাড়িতে ২২০ সিএফটি বালি নিয়ে গেলে কোনও সমস্যা নেই। তাতে যদি কেউ অর্থ চায়, তবে তাঁকে ফোন করার পরামর্শ দিয়েছেন। যদি কোনও গাড়ি বাড়তি বালি নিয়ে যায়, তবে যে এলাকা দিয়ে যাচ্ছে সেই থানাকে ফোন করতে হবে। থানা ব্যবস্থা না নিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মহকুমার এক পুলিশকর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। তারই জেরে পরিকল্পনামাফিক অবরোধ করা হয়ে থাকতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement