একসঙ্গে খাওয়া-পড়া, একসঙ্গে স্কুলে যাওয়া, নম্বরও একই যমজ বোনের!

মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রাম শ্রী যোগাদ্যা বাণীপীঠের ছাত্রী চিন্ময়ী ঘোষ ও মৃন্ময়ী ঘোষ ৪০১ পেয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিকে। ভূগোলেও দু’বোনের নম্বর এক, ৮০। পড়শি, স্কুলের বন্ধুদের কথায়, ‘‘সারা জীবন এ ভাবেই এক সঙ্গেই খুশি থাকুক ওঁরা।’’

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৮ ০১:৫৩
Share:

মঙ্গলকোটের মৃন্ময়ী, চিন্ময়ী। নিজস্ব চিত্র

জন্ম সময়ের পার্থক্য পনেরো মিনিট। তবে জীবনের বড় পরীক্ষায় একই নম্বর পেলেন দু’বোন।

Advertisement

মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রাম শ্রী যোগাদ্যা বাণীপীঠের ছাত্রী চিন্ময়ী ঘোষ ও মৃন্ময়ী ঘোষ ৪০১ পেয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিকে। ভূগোলেও দু’বোনের নম্বর এক, ৮০। পড়শি, স্কুলের বন্ধুদের কথায়, ‘‘সারা জীবন এ ভাবেই এক সঙ্গেই খুশি থাকুক ওঁরা।’’

ছোট থেকেই একই সঙ্গে স্কুলে যান,একই সঙ্গে পড়তে বসেন মঙ্গলকোটের কুড়ুম্বা পশ্চিমপাড়ার চিন্ময়ী ও মৃন্ময়ী। স্কুলেও বরাবর কাছাকাছি নম্বরই পান তারা। বাবা ভূতনাথ ঘোষের সামান্য কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। দু’কামরার ঘরে চার মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে সংসার ঘোষ দম্পতির। বছরের বেশি সময়টা অন্যের জমিতে ভাগচাষ করেই দিন গুজরান করেন ভূতনাথবাবু। তিনি জানান, দুই মেয়েকে আলাদা করে গৃহশিক্ষকও দিতে পারেননি। স্থানীয় দুই শিক্ষকই বিনা বেতনে সমস্ত বিষয় দেখিয়ে দিতেন দুই বোনকে। চিন্ময়ী, মৃন্ময়ীর মা রীনাদেবী বলেন, ‘‘ওরা একই সঙ্গে পড়তে বসে। একই সঙ্গে খাওয়া, স্কুলে যাওয়া সবই। দুজনের এত ভাব যে কেউ কাউকে কাছছাড়া করে না কখনও।’’

Advertisement

মাধ্যমিকেও দু’বোন কাছাকাছি নম্বর পেয়েছিলেন। বোনের থেকে ১৫ মিনিট আগে জন্মানো চিন্ময়ী পেয়েছিলেন ৪১০ ও মৃন্ময়ী পেয়েছিলেন ৪০৮। আপাতত ইংরেজি নিয়ে পড়তে চান তাঁরা। দুই বোনেরই স্বপ্ন পুলিশ হওয়ার। ভয় করবে না? দুই বোনের সটান উত্তর, ‘‘জীবনভর সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই। তার জন্য পুলিশের থেকে ভাল আর কী হতে পারে!’’

দু’বোনের সাফল্যে গর্বিত স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক প্রেমানন্দ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা বরাবরই মেধাবী। ক্লাসে ওঁদের আলাদা নজর দেওয়া হয়েছি।’’

পরীক্ষায় যমজদের একই নম্বর পাওয়া এ রাজ্যে নতুন নয়। ২০০৫-এ উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার রজত ও রাকেশ সরকার মাধ্যমিকে ৫৭৭ নম্বর পান। ২০১৩ সালে সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় একই গ্রেড পান সল্টলেকের বাসিন্দা দুই বোন— নন্দিতা ও নম্রতা বাগচী। দু’জনেই ‘এ+’। উদাহরণ রয়েছে তার আগেও। রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত এবং তাঁর সহোদর ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের (আইএসআই) প্রাক্তন অধ্যাপক অতীশ দাশগুপ্ত স্কুল ফাইনালে একই নম্বর পান। গত বছর মাধ্যমিকে বীরভূমের মহম্মদবাজারের দুই ভাই ঋত্বিক ও সৌপ্তিকও একই নম্বর পেয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement