জাতীয় স্তরে খেলার স্বপ্ন অনন্যা ও মুসকানের

দু’জনেই সফল রাজ্যস্তরের ব্যাডমিন্টনে। তবে খেলা চালিয়ে যেতে বাধ সাধছিল দারিদ্র। সম্প্রতি তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। আর তার জেরেই এ বার জাতীয় স্তরে খেলার স্বপ্ন দেখছে পূর্ব বর্ধমানের অনন্যা বিশ্বাস ও শেখ মহম্মদ মুসকান।

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৭:২০
Share:

দুই ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়ের হাতে ক্রীড়াসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন মহকুমাশাসক। নিজস্ব চিত্র

অভাবকে সঙ্গী করেই তাদের বেড়ে ওঠা। স্কুলের পড়াশোনা শেষ হয়নি এখনও। এ ছাড়া, এই দু’জনের আরও একটা মিল রয়েছে। দু’জনেই সফল রাজ্যস্তরের ব্যাডমিন্টনে। তবে খেলা চালিয়ে যেতে বাধ সাধছিল দারিদ্র। সম্প্রতি তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। আর তার জেরেই এ বার জাতীয় স্তরে খেলার স্বপ্ন দেখছে পূর্ব বর্ধমানের অনন্যা বিশ্বাস ও শেখ মহম্মদ মুসকান।

Advertisement

বড়শুলে অনন্যা বিশ্বাসের বাড়ি। বছর চারেক আগে তার মা মারা যান। বাবা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সামান্য বেতনের কর্মচারী। মা মারা যাওয়ার পরে অনন্যা চলে আসে মেমারির পাল্লাবাজারে তার পিসির বাড়িতে। শক্তিগড় গার্লস হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী অনন্যা। পড়াশুনার পাশাপাশি, ছোট থেকেই তার ঝোঁক ব্যাডমিন্টনে। স্কুলভিত্তিক জেলা প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়ে সে রাজ্য পর্যায়ে যোগ দেয়। কিন্তু খেলা চালিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পারিবারিক অনটন। খেলার জন্য আধুনিক র‍্যাকেট, জুতো ও পোশাক কেনার সামর্থ্য ছিল না তার।

অন্য দিকে, রায়না ১ ব্লকের বহরমপুর গ্রামের শেখ মহম্মদ মুসকানের বয়স তেরো। শ্যামসুন্দর রামলাল আদর্শ বিদ্যামন্দিরের নবম শ্রেণির ছাত্র সে। তার বাবা ক্ষেতমজুরের কাজ করে সংসার চালান। মুসকানও ছোট থেকেই ব্যাডমিন্টনে সাফল্যের মুখ দেখেছে। অনূর্ধ্ব ১১ বিভাগে জেলা স্তরে পরপর দু’বছর দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় সে। এর পরে রাজ্যস্তরের পাশাপাশি, ‘খেলো ইন্ডিয়া’তেও মেলে সাফল্য। কিন্তু তারও সামনে বাধা দারিদ্র।

Advertisement

অভাবে দুই প্রতিভা শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে আসরে নামেন পূর্ব বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক তথা জাতীয় পর্যায়ের আম্পায়ার অরিন্দম বিশ্বাস। তিনি জানান, প্রথমে জেলাশাসককে বিষয়টি জানানো হয়। তার পরে তাঁর কথামতো সদর দক্ষিণ মহকুমাশাসককে এবং স্থানীয় বিডিওদেরও জানানো হয়। আর এর পরেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বর্ধমান সদর দক্ষিণের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে অনন্যা ও মুসকানের হাতে প্রয়োজনীয় র‍্যাকেট ও জুতো তুলে দেন। দেওয়া হয় খেলার পোশাক ও কিট ব্যাগও। বিডিও-র তরফ থেকেও তাদের সাহায্য করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এখন তারা জাতীয় স্তরের খেলোয়াড় সম্রাট দাস ও অরিন্দম বিশ্বাসের কাছে অনুশীলন করছে।

মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে বলেন, “দুই প্রতিভা অনটনের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে শুনে আমরা এগিয়ে আসি। চাই ওরা জেলা থেকে ন্যাশনাল খেলুক। প্রশাসন ওদের পাশে আছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন