ঢলদিঘির হোমে। —নিজস্ব চিত্র।
সরকারি হোম ঘুরে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন হাইকোর্টের দুই বিচারপতি। শনিবার দুপুরে হাইকোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের চেয়ারম্যান বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া ও কমিটির সদস্য সৌমেন সেন বর্ধমান শহরের ঢলদিঘি সরকারি হোমে যান। সেখানকার পরিকাঠামো থেকে হোমের সুপারের আচরণ নিয়ে বিচারপতিদের কাছে অভিযোগ করেন মহিলা আবাসিকেরা। আজ, রবিবার বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার সভাকক্ষে একটি বৈঠকে হোম ঘুরে কী কী অব্যবস্থা দেখা গিয়েছে, তা জানানোর কথা বিচারপতিদের।
এ দিন ওই হোম দেখার পরে বর্ধমানের তালিতের কাছে চাইল্ডলাইনের একটি হোম ও তার পাশে শিশুদের হোম ঘুরে দেখে অবশ্য সন্তুষ্ট হন বিচারপতিরা। সন্ধ্যায় তাঁরা যান কাটোয়ার আনন্দ নিকেতন হোমে। সেখানে মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিকেরা ছাড়াও বৃদ্ধাশ্রমের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, রবিবারের সভায় জেলাশাসক, জেলা জজ, পুলিশ সুপার, সিজেএম, জেলার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সদস্য, চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্যেরা থাকবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন হোমের কর্তা থেকে স্বেচ্ছাসেবী নানা সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা করবেন বিচারপতিরা। সেখানে হোমগুলির অব্যবস্থা ছাড়াও জেলায় শিশুযত্ন, সুরক্ষা আইন কতটা কার্যকর হচ্ছে সে নিয়ে আলোচনা করবেন বিচারপতিরা।
শুক্রবারই জেলা আদালত ও প্রশাসন যৌথ ভাবে ঢলদিঘির হোমে গিয়ে আবাসিকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। বিচারপতিদের সামনে আবাসিকেরা যাতে মুখ না খোলেন, সেই পরামর্শও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে হোমে ঢোকার আগে বিচারপতিরা প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে সে নিয়ে প্রশ্নও তোলেন। ঢলদিঘির সরকারি হোমের জায়গা ও পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩টি মেয়েকে গাদাগাদি করে কেন রাখা হয় বা মেয়েদের জন্য কোনও ভোকেশনাল কোর্সের ব্যবস্থা নেই কেন, সে সব প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ জানান বিচারপতিরা। হোম ঘুরে দেখার ফাঁকে এক মহিলা আবাসিকের আঁকা ছবি দেখে প্রশংসা করেন বিচারপতিরা।
প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, এর পরেই আবাসিকেরা সুপারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন। খাবারের মান তো বটেই, সুপারের আচার-আচরণ নিয়েও অভিযোগ করেন। আজ, রবিবারের বৈঠকে সুপারকে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। সুপার মৌসুমী ঘোষ অবশ্য এ দিন কোনও কথা বলতে চাননি।