গোলাপ কিনতে ব্যস্ত। কাটোয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
ভ্যালেন্টাইনস্ ডে’র আগের দিন প্রিয় মানুষটির জন্য গোলাপ কিনতে গিয়েছিল মেয়েটি। তবে গোলাপে হাত দিতেই যেন কাঁটা ফুটল মনে! দামেই ভিরমি খাওয়ার জোগার। জোগান আর চাহিদা— সেই অমোঘ সম্পর্কেই চড়া দাম বিক্রি হচ্ছে গোলাপ। ভ্যালেন্টাইনস ডে’র প্রাক্কালে কাটোয়ার ফুলের বাজারের ছবি এমনটাই।
একে বিয়ের মরসুম। দোসর ভ্যালেন্টাইনস্ ডে। জোড়া পার্বনে ফুলের চাহিদা তুঙ্গে। বিশেষত গোলাপের। কাছারি রোডে বছর চল্লিশ ধরে ফুলের ব্যবসায় যুক্ত দেবব্রত দাস, মানিক সাহারা। তাঁরা জানালেন, এ সময় মূলত দু’ধরনের গোলাপ আসে। দিশি গোলাপ ও ব্যাঙ্গালোর গোলাপ। দিশিগুলোর আকার ছোট হওয়ায় প্রতি গোলাপ দশ টাকায় ঘোরাফেরা করলেও ব্যাঙ্গালোর গোলাপ ইঞ্চি দু’য়েক লম্বা। দাম ১৫টাকা। আর ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে ব্যাঙ্গালোর গোলাপেরই চাহিদা বেশি, জানালেন ব্যবসায়ীরা। ফুল ব্যবসায়ী শিবেন্দু গঙ্গোপাধ্যায়, উত্তম সাহাদের কথায়, ‘‘পূর্বস্থলীতে গাঁদা বা অন্য ফুলের চাষ হলেও কাটোয়ার ধারে কাছে গোলাপের চাষ হয় না। হাওড়ার জগন্নাথঘাট বা কলকাতার মল্লিকবাজার থেকে ফুল আনতে হয়। গোলাপ প্রতি পাঁচ টাকা দাম পড়ে যায়। এরপর ঝাউপাতা, রাংতা দিয়ে মুড়তে খরচ হয় আরও চার টাকা। এরপর আর কী লাভ থাকে!’’
১৪ই ফেব্রুয়ারির কথা মাথায় রেখে সপ্তাহখানেক আগে হাজার ন’য়েক গোলাপ এনেছিলেন দেবব্রতবাবু। হাজার দু’য়েক এনেছেন মানিকবাবুও। এতেও চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না বলেই অনুমান তাঁদের। অন্য দিকে জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস প্রভৃতি ফুলও ১২ থেকে ১৫ টাকা পিস হিসাবে বিক্রি করছেন দোকানিরা। অর্কিড ত্রিশ টাকা পিস! দেবব্রতবাবুদের কথায়, ‘‘অর্কিড বা গ্ল্যাডিওলাসের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। এগুলো মূলত আসে পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদা থেকে। আনার খরচ বেশি পড়ে যাওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।’’
তবে দাম যতই বাড়ুক, গোলাপ ছাড়া এ দিনটা ভাবতে পারেন না যুগলেরা! কলেজ পড়ুয়া শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রিয়াঙ্কা ঘোষদের কথায়, ‘‘মনের কথা গোলাপ ছাড়া কেই বা জানান দিতে পারে।’’