কচিদের পিঠে চাপ বইয়ের ব্যাগের, থিম পুজো মণ্ডপে

প্রতিযোগিতার জাঁতাকলে শিশুদের উপরে চাপ বাড়ছে ক্রমশ। আউশগ্রামের এক পুজো উদ্যোক্তারা এ বার বেছে নিয়েছেন এমন থিম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:০৮
Share:

পূর্বস্থলীর এক মণ্ডপে। নিজস্ব চিত্র

সরস্বতী পুজোয় হাতে খড়ি দিয়ে পড়াশোনা শুরু করার রেওয়াজ বহু পুরনো। পাঁচ বছর বয়স হলে বাগদেবীর সামনে বসে হয় হাতেখড়ি। কিন্তু এখন পাঁচ বছরের আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় পড়াশোনা। প্রতিযোগিতার জাঁতাকলে শিশুদের উপরে চাপ বাড়ছে ক্রমশ। আউশগ্রামের এক পুজো উদ্যোক্তারা এ বার বেছে নিয়েছেন এমন থিম।

Advertisement

আউশগ্রামের রামনগরের পুজো মণ্ডপে দেখানো হয়েছে, যে বয়সে শিশুদের সোজা হয়ে দাঁড়ানোর কথা, তখনই বইয়ের ব্যাগের ভারে তাদের মেরুদণ্ড বেঁকে যাচ্ছে। উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই স্থানীয় রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। সপ্তম শ্রেণির অলীক চট্টোপাধ্যায়, অর্পণ চন্দ্র, রত্নদীপ অধিকারীরা বলে, ‘‘এখন শুধু পড়া আর পড়া। আমরাও বাড়ির লোকজনের প্রত্যাশা পূরণের জন্য চাপে থাকি সব সময়। তাই এরকম একটা থিম ভেবেছি।’’ তারা জানায়, নিজেরাই এই মণ্ডপ তৈরি করেছে।

শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘নার্সারি থেকেই পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন বেড়ে যায়। ছোট থেকে এই চাপে অনেক সময় শিশুদের ক্ষতি হয়। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলোও দরকার। সরস্বতী পুজোয় এরকম একটা থিম বেশ প্রাসঙ্গিক।’’

Advertisement

আউশগ্রামের দিগনগরের সবুজ সঙ্ঘের সরস্বতী পুজোর মণ্ডপের বিষয় নির্মল বাংলা। পুজো মণ্ডপে পরিচ্ছন্ন গ্রাম তৈরির ডাক দেওয়া হয়েছে। গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়ে এ দিন এক সঙ্গে বসে পুষ্পাঞ্জলি দেয় ধর্ম নির্বিশেষে পড়ুয়ারা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন দেখা গিয়েছে পুজোকে কেন্দ্র করে, জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। বুদবুদ হিন্দি স্কুলেও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে সামিল করে পুজো করা হয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সাবেদ। তিনি জানান, গলসির দু’টি ব্লক মিলিয়ে একমাত্র হিন্দি স্কুল এটি। শুধু সরস্বতী পুজো নয়, সমস্ত অনুষ্ঠান বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেই করেন।

এ দিন মেমারি বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যামন্দিরে (শাখা ১) সরস্বতী পুজোর আড্ডায় যোগ দেন মেমারির বিধায়ক নার্গিস বেগম। মানকর রামকৃষ্ণ পূর্ণানন্দ আশ্রমে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। পূর্বস্থলীর নানা পুজো উদ্যোক্তা এ বার বিভিন্ন রকম থিমের পুজো করেছে। টালির ভাটা শিবশঙ্কর ক্লাব (সন্ধিক্ষণ) বড় ডাইনোসর তৈরি করেছে মণ্ডপে। বেলগাছির নানা পুজোতেও মানুষের ঢল নামে সোমবার। মেমারির মোনালিসা ক্লাবে এ বার পুজোর থিম ভাবনা ফেসবুক। উদ্যোক্তারা জানান, ১৬ বছর বন্ধ থাকার পরে ফেসবুকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পুজো ঠিক হয়। কৌশিক বিষয়ী, পার্থ ঘোষেরা বলেন, ‘‘এত বছর পরে সব বন্ধুদের মিলনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ ফেসবুকের কাছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন