জেমুয়ার শ্মশান। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিনের পুরনো শ্মশানে পরিকাঠামো উন্নয়নে কোনও নজর দেওয়া হয়নি। ফাঁকা জায়গায় দাহ করতে হয়। চিতার উপরে কোনও ছাউনির ব্যবস্থা নেই। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। কিন্তু গরমে লাগোয়া পুকুরটি শুকিয়ে যায়। সীমানা পাঁচিল না থাকায় দূষণ ছড়ায়। এমন সব অভিযোগ তুলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেমুয়া গ্রামের বাইরে জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠের পিছন দিকে রয়েছে শ্মশানটি। বৈদ্যুতিক চুল্লি নেই। প্রচলিত চুল্লিতেই শবদাহ করা হয়। কয়েক বছর আগে দুর্গাপুর শহরের বীরভানপুরে দামোদরের পাড়ে বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হওয়ার পরে এই শ্মশানের উপরে চাপ কমেছে। তবে গ্রামের মানুষজনের অনেকেই এখনও যাতায়াত খরচ ও অন্য নানা কারণে জেমুয়ার স্থানীয় শ্মশানেই দাহ করতে আসেন। তাঁদের বক্তব্য, বীরভানপুরে দেহ নিয়ে যেতে হলে গাড়ির ব্যবস্থা করতে হয়। আর্থিক কারণে গ্রামের অনেকের পক্ষেই তা সম্ভব হয় না।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, শ্মশানে আগে শবযাত্রীদের বসার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। কয়েক বছর আগে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের তরফে একটি পাকা ছাউনি গড়ে দেওয়ায় সমস্যা মিটেছে। কিন্তু চিতার উপরে কোনও ছাউনি নেই। ফলে, বর্ষার সময় বিপাকে পড়েন শবযাত্রীরা। শ্মশান কমিটির অন্যতম সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, “বর্ষায় দাহ করতে গেলে সঙ্গে ত্রিপল নিয়ে যেতে হয়। বৃষ্টি থামলেও মাটি ভিজে থাকায় দেরি হয়।” পানীয় জলের অভাবেও সমস্যায় পড়েন শ্মশানযাত্রীরা। দেহ দাহ করার পরে চিতার আগুন নেভানোর জন্য জল দিতে হয়। লাগোয়া পুকুরটি গরমে শুকিয়ে যায়।
বাসিন্দারা জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে বেশ কয়েক বছর আগে তাঁরা শ্মশানে ছাউনি তৈরির আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। তবে কিছুটা আশার কথা শোনা গিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থার (এডিডিএ) কাছ থেকে। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শ্মশানের চিতার উপরে পাকা ছাউনি গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পদ্ধতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ঠিকাদার সংস্থা নির্দিষ্ট করার কাজ হয়ে গেলে তার পাঁচ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।