দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড
নামটা শুধু এক রয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) মালিকানা চলে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে।
রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা ডিপিএল দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলছে। ১৯৬০ সালে তৈরি ডিপিএলে আটটি ইউনিটের মধ্যে শুধু সপ্তম ও অষ্টম ইউনিটটি চালু রয়েছে। কোকআভেন প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২০১৫ সালের জুনে। সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, লোকসানে চলা ডিপিএলকে বাঁচাতে ঢেলে সাজা হবে। সে জন্য মালিকানা তুলে দেওয়া হবে নিগমের হাতে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে রাজ্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে। ঠিক হয়, ডিপিএলের বিদ্যুৎ উৎপাদন, বণ্টন ও সংবহন বিভাগ মিশিয়ে দেওয়া হবে অন্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে। সেই প্রক্রিয়াই আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে বলে ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি জানায়, প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত করতে গেলে ডিপিএলের কর্মী সংখ্যা কমানো জরুরি। সে জন্য রাজ্য সরকার ডিপিএলের ৪৫ বছরের বেশি বয়সের কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প নিয়ে এসেছে। আবেদনের শেষ দিন ছিল ৩১ ডিসেম্বর। বিভিন্ন কর্মী সংগঠনের অভিযোগ, যে প্যাকেজ নির্দিষ্ট করা হয়েছে তাতে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন স্বেচ্ছাবসর নেওয়া কর্মীরা। সে কারণেই সোমবার পর্যন্ত তাতে তেমন সাড়া মেলেনি। কর্তৃপক্ষ তাই আপাতত আবেদন করার জন্য আরও ১৫ দিন মেয়াদ বাড়িয়েছেন।
সংস্থার একটি সূত্রের দাবি, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় আড়াইশো কর্মীর মধ্যে জনা পঞ্চাশকে ডিপিএলে রাখা হবে। বাকিদের রাজ্যের অন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে স্থানান্তর করা হতে পারে। এমন সম্ভাবনার কথা জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কর্মী সংগঠনগুলি। আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাসের কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে কর্মীরা এখানে কাজ করেছেন। এখন অন্যত্র পাঠানো হলে তাঁরা নানাবিধ সমস্যায় পড়বেন।’’ একই ভাবে কোকআভেন বিভাগের প্রায় সাড়ে তিনশো কর্মীকে রাজ্যের অন্য নানা শিল্প-সংস্থায় স্থানান্তরের কথা ভাবা হচ্ছেও বলে জানা গিয়েছে। সংস্থার সূত্রের খবর, দু’তিন মাসের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
ফলে, কিছু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নিয়েই নতুন বছর শুরু করছেন তাঁরা, জানান ডিপিএলের কর্মীরা। কয়েকজন প্রবীণ কর্মীর কথায়, ‘‘বাইরে থেকে এসে এত দিন ডিপিএলের কোয়ার্টারে থেকে কাজ করেছি। শেষবেলায় কোথায় গিয়ে পড়ব কে জানে!’’ ডিপিএল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। এক আধিকারিক শুধু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো ধাপে-ধাপে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’