Bus

পর্যাপ্ত বাস নেই, দুর্ভোগ শিল্পাঞ্চলে

আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা মূলত বেসরকারি ও মিনিবাসের উপরেই নির্ভরশীল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০৫:২৯
Share:

অন্য সময়ে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত বাস। এখন হাতেগোনা। আসানসোল বাসস্ট্যান্ড চত্বর। নিজস্ব চিত্র

‘আনলক ১’ ঘোষণার পরে, এক সপ্তাহ কেটে গেল। কিন্তু এখনও পূর্ণ সংখ্যায় বাস ও মিনিবাস চলাচল শুরু হল না পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পাঞ্চলের রাস্তায়।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। দীর্ঘক্ষণ বাসস্ট্যান্ড ও বিভিন্ন বাসস্টপে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে যাত্রীরা অটো বা টোটোয় চেপে গন্তব্যে রওনা দিচ্ছেন। সোমবার সকালে আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিলেন ভানোড়ার বাসিন্দা সন্দীপ মাজি। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। বাস নেই। অগত্যা অটো ধরে প্রথমে কাল্লা যাব। সেখান থেকে একটা অটো ধরে ভানোড়ায় যাব।’’ একই ভাবে সেনর‌্যালে যাওয়ার বাস না পেয়ে অটোয় রওনা দিলেন বি-ব্লক এলাকার বাসিন্দা সুচিস্মিতা সরকার। যদিও জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পূর্ণ সংখ্যায় বাস ও মিনিবাস চলবে বলে মালিকপক্ষের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা মূলত বেসরকারি ও মিনিবাসের উপরেই নির্ভরশীল। ‘লকডাউন’ পরবর্তীতে হাতেগোনা কয়েকটি সরকারি বাস চালু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে দাবি যাত্রীদের। যাত্রী-দুর্ভোগ দূর করতে বাস ও মিনিবাস মালিকদের পূর্ণ সংখ্যায় বাস নামানো উচিত বলে মনে করে জেলা পরিবহণ দফতর।

Advertisement

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন রুট-সহ দুর্গাপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, কালনা, কাটোয়া রুটে প্রায় সাড়ে চারশো বাস চলে। মিনিবাস প্রায় ৭০০টি চলে। সোমবার আসানসোল বড় বাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন দূরপাল্লা-সহ প্রায় ৮০টি বাস রাস্তায় নেমেছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে পূর্ণ সংখ্যায় বাস রাস্তায় নামবে বলে আশা রাখি।’’ তিনি জানান, আসানসোল থেকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের বাস চলছে। এ ছাড়া, বার্নপুর রুটে ৩০টি, বরাকর রুটে ১৫টি ও গৌরবাজার রুটে ছ’টি বাস চলছে। অন্য দিকে, এ দিনও শিল্পাঞ্চলের রাস্তায় বড়-জোর ৮০টি মিনিবাস চলেছে। যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের রাস্তায় বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন, আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায়।

অন্য দিকে, রানিগঞ্জ-আসানসোল রুটে ৩২টি মিনিবাস ও চারটি বড় বাস চলেছে। জামুড়িয়া-আসানসোল ও জামুড়িয়া-রানিগঞ্জ রুটে দু’টি করে, রানিগঞ্জ-পাণ্ডবেশ্বর তিনটি, রানিগঞ্জ-কাজোড়া রুটে চারটে ও রানিগঞ্জ-উখড়া রুটে একটি, উখড়া-দুর্গাপুর রুটে তিনটি মিনিবাস চলেছে। অণ্ডাল উখড়া রুটে কোনও বাস চলেনি। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।

জামুড়িয়ার সত্তর গ্রামের উজ্জ্বল পাল, পাণ্ডবেশ্বরের অর্ধেন্দু পালরা জানান, পর্যাপ্ত বাস না চলায় বেশি ভাড়া দিয়ে টোটো ও অটো করে যেতে হচ্ছে। অবশ্য রানিগঞ্জ-আসানসোল রুটের এক মিনিবাসের চালক পরিতোষ পালের দাবি, সকালের দিকে ২০মিনিট অন্তর গাড়ি চলেছে। তার পরে ১৫ ও ১০ মিনিট অন্তর বাস চালিয়েও পর্যাপ্ত যাত্রী মেলেনি। দুর্গাপুর মিনিবাস মালিক সংগঠনের সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এ ভাবে চললে রাস্তায় বাস নামানো যাবে কি না, ভাবতে হবে।

পরিবহণ দফতরের জেলা আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাসমুন্সি বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলের রাস্তায় বাসের সংখ্যা বাড়াতে ফের মালিকদের অনুরোধ করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন