প্রতীকী ছবি।
ঘরে বসে নয়, সরেজমিনে কাজ দেখে রিপোর্ট তৈরি করার নির্দেশ জারি করলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তাঁর নির্দেশ, প্রতি বুধবার মহকুমাশাসক ও বিডিওদের প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্র বাধ্যতামূলক ভাবে পরিদর্শন করে রিপোর্ট তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
এমন নির্দেশ কেন? জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশু ও প্রসূতিদের পুষ্টিজনিত রিপোর্ট ব্লক স্তর থেকে বারবার ভুল আসছে। প্রশ্ন উঠছে বিডিওদের নজরদারি নিয়ে। আবার সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়লেও মহকুমাশাসকরা বিভিন্ন কারণে তার সত্যতা যাচাই না করেই রিপোর্ট দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। জেলাশাসক জানিয়েছেন, পরিদর্শনের দিনেও অফিস করতে হবে আধিকারিকদের। কোনও ভাবেই সাধারণ মানুষ অসুবিধার মধ্যে যেন না পড়েন। জেলাশাসকের কথায়, “আমার পরামর্শ, সকাল-বিকেল পরিদর্শন করুন আধিকারিকরা। আর দুপুরে দফতরের কাজ। তাহলে কারও অসুবিধা হবে না বলেই মনে হয়।”
আগের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন স্কুল শিক্ষা দফতর ও সর্বশিক্ষা অভিযানের আধিকারিকদের নিয়মিত জেলার বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। জেলা ও মহকুমা স্তরে একটি কমিটিও গড়া হয়েছিল। মিড-ডে মিল, পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য থেকে স্কুলের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতেন পরিদর্শকেরা। তারপর প্রতি মাসের রিপোর্ট নিয়ে বৈঠকের পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। পরিদর্শকেরা জানান, “নিয়মিত পরিদর্শনে বিভিন্ন স্কুলের অনিয়ম ধরা পড়ে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্দিষ্ট সময়ের আগে স্কুল ছেড়ে বেরোতে পারেন না।”
জেলাশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, পঞ্চায়েত দফতর, বিভিন্ন সরকারি আবাস যোজনা, রেশন দোকান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি হোম ও হস্টেলগুলি পরিদর্শন করতে হবে। সঙ্গে ‘কন্যাশ্রী’রা কী করছে তার রিপোর্টও জমা দিতে হবে। এক অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “নিয়মিত পরিদর্শনে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের ওজন দেখেই বোঝা যাবে পুষ্টি ঠিক মিলছে কি না। ওজন কম হলে কী কারণ তা দেখা হবে।” রোখা যাবে নাবালিকা বিয়েও। বিভিন্ন সময় ১৮ বছরে কম বয়সে বিয়ের অভিযোগ আসে, চাইল্ডলাইন বা পুলিশ শেষ মূহুর্তে তা আটকায়। এক মহকুমাশাসকের কথায়, “নিয়মিত পরিদর্শন হলে কন্যাশ্রীদের মধ্যে কমবয়সে বিয়ে না করার আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যাবে। অভিভাবক বা গ্রামবাসীরাও চাপে থাকবেন।”