আজ আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন

স্বাগত হাসিনা, বজ্র আঁটুনি নিরাপত্তার

শনিবার ১১টা থেকে শুরু হবে সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০১:৪৭
Share:

জোরকদমে: সেজে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট। ছবি: পাপন চৌধুরী

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাবেক রীতিতে নানা রদবদল করতে হচ্ছে বলে জানালেন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীদের পরামর্শ মতোই যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিন কয়েক নাওয়াখাওয়া ভুলে চলেছে প্রস্তুতি। আজ, শনিবার সমাবর্তনের আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে চেষ্টার কোনও রকম ত্রুটি রাখা হবে না।

Advertisement

শনিবার ১১টা থেকে শুরু হবে সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই সভাকক্ষ ও অনুষ্ঠানস্থল নিজেদের দখলে নিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। প্রধানমন্ত্রীর রক্ষীদের পরামর্শমতোই যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানান অনুষ্ঠানের অন্যতম পর্যবেক্ষক তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান সজল ভট্টাচার্য।

Advertisement

কী কী বিশেষ রদবদল বা ব্যবস্থা করা হয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, গত বছরগুলির সমাবর্তনে সভাকক্ষে প্রথমে রেজিস্ট্রার, পরে আচার্য, উপাচার্য, প্রাক্তন উপাচার্য, বিশিষ্ট অতিথি এবং শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোর্টে’র সদস্যরা ঢুকতেন। এ বার প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সবার শেষে সভাকক্ষে ঢুকবেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর বসার জায়গাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তাঁর রক্ষীরা।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশেষ বিমান এসে পানাগড় সেনা ছাউনিতে নামেন। সেখান থেকে হেকিকপ্টারে চড়ে তিনি যান শান্তিনিকেতনে, বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে যোগ দিতে। আজ, শনিবার, অণ্ডালে নামবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বিমান। তার আগে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে তৈরি এলাকা। ছবি: বিকাশ মশান

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, অনুষ্ঠান মঞ্চে এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড লাগানোর কথা থাকলেও বাংলাদেশের রক্ষীদের আপত্তিতে তা করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী কোন পথে মঞ্চে ঢুকবেন, কোথায় বিশ্রাম নেমেন, খাওয়া-দাওয়া কোথায় করবেন, তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি শাল ও সমাবর্তনের বিশেষ পোশাক দেবেন, তাঁর সচিত্র পরিচয়পত্র ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য প্রধানমন্ত্রীর রক্ষীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তা ছাড়া প্রথমে ঠিক ছিল, অণ্ডাল বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু শুক্রবার নিরাপত্তা আধিকারিকেরা জানান, নিরাপত্তাগত কারণেই তার প্রয়োজন নেই।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানায়, আজ, শনিবার বেলা ১০টা ২০ নাগাদ অণ্ডালে নামবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিমান। তার পরে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে তাঁর কনভয় পৌঁছবে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর পরে খানিক বিশ্রাম নেবেন হাসিনা। পৌনে ১২টা নাগাদ তিনি ঢুকবেন সভাঘরে।

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, সভাকক্ষের দখল নিয়েছে পুলিশ। ঘন ঘন এলাকায় আসেন কমিশনারেটের পুলিশকর্তারা। বিকেল তিনটে নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা আধিকারিকেরা গোটা অনুষ্ঠানের একপ্রস্থ মহড়াও দেন। দুপুর থেকে আসানসোলের আকাশে চক্কর কাটতে দেখা গিয়েছে তিনটি হেলিকপ্টারকে। কাল্লা মোড় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল দরজা পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকে বাঁশের খুটির বেড়া দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কনভয় শহরে ঢোকার ১৫ মিনিট আগেই সেই রাস্তা পুরোপুরি ফাঁকা করে দেওয়া হবে বলে জানান পুলিশকর্তারা। ওই সময়ে পথচারীদের বেড়ার ধার দিয়ে যেতে পারেন। আমন্ত্রণপত্র ছাড়া মূল সভাকক্ষে কারও প্রবেশাধিকার নেই। সকাল সওয়া ১১টার মধ্যেই প্রত্যেককে আসনে বসার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ‘‘তবে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি যাই থাকুক, তাতে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে কোনও রকম তাল কাটবে না’’, বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন