বৈঠকের আমন্ত্রণ ঘিরে বিতর্ক

জেলা ভাগের পরে  পশ্চিম বর্ধমানে প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক আজ, সোমবার। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয়, উন্নয়নমূলক কাজের পর্যালোচনা। কিন্তু ‘উন্নয়ন’ সংক্রান্ত সেই বৈঠকে আমন্ত্রিতদের তালিকায় জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সদস্য নেই।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

জেলা ভাগের পরে পশ্চিম বর্ধমানে প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক আজ, সোমবার। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয়, উন্নয়নমূলক কাজের পর্যালোচনা। কিন্তু ‘উন্নয়ন’ সংক্রান্ত সেই বৈঠকে আমন্ত্রিতদের তালিকায় জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সদস্য নেই। এমনকী ডাক পাননি, খোদ জেলা সভাধিপতিও। আমন্ত্রিত শুধুমাত্র প্রশাসনের কর্তারাই। আমন্ত্রিতের এই তালিকা প্রকাশ্যে আসার পরেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

Advertisement

প্রশাসন জানায়, বার্নপুরের ইস্কো ভারতী ভবন প্রেক্ষাগৃহে বিকেল চারটে থেকে বৈঠক শুরু হবে। বৈঠক পরিচালনা করবেন মুখ্যসচিব মলয় দে। এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য মোট ১১০ জনকে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। একমাত্র বিডিও, অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিক ও দফতরগুলির প্রধানেরা আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছে।

পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়ে জেলার আটটি ব্লকের কাজকর্মের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। গ্রামীণ এলাকায় একশো দিনের কাজে নিয়মিত শ্রমিক মিলছে কি না, শ্রমিকদের কাজের আগ্রহ বাড়ানো যাচ্ছে কি না, এ সব পর্যালোচনা করা হতে পারে। ‘নির্মল বাংলা অভিযান’-এ কত শৌচাগার তৈরি এখনও বাকি আছে, আবাস যোজনার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না বৈঠকে উঠে আসতে পারে এ সব বিষয়ও। এ ছাড়া ‘সবুজসাথী’ ও ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প, পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা, খনি এলাকায় পুনর্বাসন প্রকল্প ইত্যাদির কী হাল সে সব বিষয়ও আলোচনা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নতুন জেলার পরিকাঠামো উন্নয়ন, দফতরের আধিকারিক-কর্মী নিয়োগে সমস্যা, ভূমিরাজস্ব, পরিবহণ ও নারেগা প্রকল্পের কাজের অবস্থা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

Advertisement

কিন্তু এ সব কাজের পর্যালোচনা জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের না ডেকে কতখানি সম্ভব, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, জেলা পরিষদ সদস্য ও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানান, জেলা ও ব্লক স্তরে উন্নয়নমূলক কাজের বাস্তবায়ন হয় জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলির কর্মাধ্যক্ষদের হাতে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে তাই নানা প্রকল্প ও উন্নয়নের প্রকল্পগুলির ঠিক হাল হকিকতের আন্দাজ পাওয়া মুশকিল বলেই অনুমান ওয়াকিবহাল মহলের।

কিন্তু কেন আমন্ত্রণ হয়নি জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের কাছে? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষের দাবি, নতুন জেলায় এ পর্যন্ত পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে বহু খামতি রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কর্মাধ্যক্ষদের একাংশ ক্ষুব্ধ। এক কর্মাধ্যক্ষের দাবি, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি কারণ, বৈঠকে তাঁরা অবশ্যই খামতিগুলির বিষয়ে সরব হতেন। সে ক্ষেত্রে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির তৈরি হতে পারত।

যদিও এই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশাসনের কোনও কর্তা, জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সদস্য মুখ খুলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন