প্রচারে কে কাকে টেক্কা দিল, জল্পনা

রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরের দু’টি আসন হাতছাড়া হওয়ার পরেই পুরভোট নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কপালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৩
Share:

শেষ-প্রচারে: দুর্গাপুরের এমএএমসি কলোনিতে তৃণমূলের মিছিল। সিপিএমের প্রচার ৫৪ ফুট এলাকায়।শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

আগের পুরভোটে তৃণমূলের দখলে ছিল ৩১টি ওয়ার্ড। কিন্তু ২০১৬-র বিধানসভায় ভোটের অঙ্কে ৪০টি ওয়ার্ডেই এগিয়ে যায় বিরোধী-জোট। এই অঙ্ককে মাথায় রেখেই এ বারের দুর্গাপুর পুরভোটের আগে প্রচারে ঢেউ তুলতে শহরে দেখা গিয়েছে একাধিক ‘হেভিওয়েট’ তৃণমূল নেতাকে। উল্টো দিকে, বছরভর নানা বিষয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে কর্মসূচি নিয়েছে বিরোধীরাও। শুক্রবার, প্রচারের শেষ দিনে, শহরবাসীর মতে, এখন হিসেব মেলানোর পালা, প্রচারে টেক্কা কে কাকে দিল।

Advertisement

রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরের দু’টি আসন হাতছাড়া হওয়ার পরেই পুরভোট নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কপালে। তার পরেই জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস দুর্গাপুরে দলের সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। ভোট প্রচারে নামানো হয় একাধিক শীর্ষ নেতাকেও। সেই নেতাদের তালিকায়, স্বয়ং জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস তো ছিলেনই। সঙ্গে ছিলেন, পূর্ব বর্ধমানের নেতা, মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি থেকে কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কেও। অরূপবাবুকে নিজে দেখা গিয়েছে, দুর্গাপুরের সব ওয়ার্ডে ঘুরে-ঘুরে দিন-রাত প্রচার করতে। শুক্রবারও তিনি ৮ নম্বর-সহ একাধিক ওয়ার্ডে ‘রোড-শো’ করেন। সঙ্গে ছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। ১৩, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার চালান ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতম শুক্ল। এ দিন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের মিছিলে রণ-পায়ে হাঁটেন শিল্পীরা। সেই মিছিল পা মেলাতে দেখা যায় বিদায়ী মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কেও।

অটোয় প্রচার চলছে কংগ্রেসের। হেড কোয়ার্টার এলাকায়। ভারতী এলাকায় মিছিল বিজেপি-র।

Advertisement

সিপিএম-ও শেষ প্রহরে ভোট-প্রচারে পিছিয়ে ছিল না। এ দিন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রাঁচি কলোনি থেকে প্রান্তিকা পর্যন্ত মিছিল করে তারা। এর আগে ভোট প্রচারে ডিএসপি টাউনশিপে সূর্যকান্ত মিশ্র, ডিপিএল কলোনিতে মহম্মদ সেলিমরা সভা করেছিলেন। প্রচারে ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে সিপিএম ভোট-প্রচারের থেকেও টানা দু’বছর ধরে লাগাতার কর্মসূচিকেই বেশি জোর দিয়েছে বলে শহরবাসীর দাবি। বেহাল নাগরিক পরিষেবা-সহ নানা বিষয় নিয়ে বছরভর কর্মসূচি নিয়েছিল সিপিএম। তাই শুক্রবার দুর্গাপুরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘শুধু ভোটের সময় বলে নয়। বছরভর নানা বিষয়ে আমরা মানুষের পাশে থেকেছি। তারই প্রভাব পড়বে ভোট বাক্সে।’’

বিজেপি-র ভোট প্রচারেও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় একাধিক সভা করেছেন। এ দিনও দুর্গাপুরের ভারতী এলাকায় মোটরবাইক মিছিল করে বিজেপি। এ দিন বিজেপি নেতা তথা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোটের দিন তৃণমূল যদি ভাবে, ভোট-লুঠ করবে, তা হলে তাদের ফল ভুগতে হবে।’’ তবে কংগ্রেসের প্রচারে তাল কেটেছিল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র প্রকাশ্যে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থন জানানোর আবেদনে। তবে আটটি আসনের জন্য এ দিনও যথাসাধ্য প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসকেও।

শহরবাসীর দাবি, ধারে-ভারে ভোট প্রচারে শাসক দল হয়তো খানিকটা এগিয়েই ছিল বিরোধীদের থেকে। কিন্তু, ১৭ অগস্ট, ভোট-গণনার দিনই আপাতত পাখির চোখ শাসক-বিরোধী, সব পক্ষেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন