তারে কাপড় মেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, মৃত্যু মহিলার

পুলিশ জানায়, স্নান সেরে এ দিন সকাল ৯ টা নাগাদ বাড়ির উঠোনে মালতীদেবী তারে জামা-কাপড় মেলতে যান। সেই সময়েই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। কিছুটা দূরেই ফুল তুলছিলেন তাঁর জা, সন্ধ্যাদেবী। তিনি তার থেকে মালতিদেবীকে ছাড়াতে যান। সেই সময়ে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪২
Share:

এই বাড়িতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন দুই মহিলা। নিজস্ব চিত্র

স্নান সেরে লোহার তারে জামা-কাপড় মেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক মহিলার। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হন আরও এক জন। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরের ভাবা রোড বস্তির ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম মালতী ভদ্র (৪৬)। জখম সন্ধ্যা ভদ্রকে দুর্গাপুর স্টিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, স্নান সেরে এ দিন সকাল ৯ টা নাগাদ বাড়ির উঠোনে মালতীদেবী তারে জামা-কাপড় মেলতে যান। সেই সময়েই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। কিছুটা দূরেই ফুল তুলছিলেন তাঁর জা, সন্ধ্যাদেবী। তিনি তার থেকে মালতিদেবীকে ছাড়াতে যান। সেই সময়ে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। কিন্তু সন্ধ্যাদেবীর চিৎকারে ততক্ষণে লাগোয়া এলাকা থেকে অনেকে ছুটে আসেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রদীপ গড়াই নামে এক জন। প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘দেখি দু’জনেই কাপড় মেলার তারে আটকে রয়েছেন। ওঁরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন বুঝতে পেরে মেন সুইচ বন্ধ করে দিই। তার পরে দু’জনে ছিটকে পড়েন।’’

অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে দু’জনকেই ডিএসপি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে মালতীদেবীকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। সন্ধ্যাদেবী চিকিৎসাধীন। মালতীদেবীর দুই ছেলের এক জন গৌরাঙ্গ বলেন, ‘‘দোকানে কাজ করছিলাম। বাবা ফোন করে জানান, মা ও বড় মা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। দৌড়ে বাড়ি আসি।’’ সন্ধ্যাদেবীর মেয়ে আশা হালদার জানান, তিনি জেসি বোস রোডে থাকেন। ঘটনার খবর পেয়ে তাঁর জামাইবাবু তাঁকে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘‘এসে দেখি কাকিমা অসাড় হয়ে পড়ে রয়েছেন। মায়ের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ পড়শিরা জানান, বাড়ি থেকে সামান্য দূরে শৌচাগার। বাড়ির ভিতর থেকে তার টেনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বাথরুমে। সেই তারের সঙ্গে কোনওভাবে কাপড় মেলার তারের সংযোগ হওয়াতেই এই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বাড়ি থেকে শৌচাগারের মাঝে বিদ্যুতের তারটি এক বার আটকানো হয়েছে অ্যাসবেস্টসের চাল থেকে বেরিয়ে থাকা একটি লোহার পাইপে। সেই পাইপেই আবার বাঁধা হয়েছে কাপড় মেলার তারটি। দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ পরিবাহী তারটি যে বদলানো হয়নি, তা দেখেই বোঝা যায়। তারের উপরি ভাগ রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে অনেক জায়গায়। কোনও ভাবে বিদ্যুৎবাহী তারের সঙ্গে ওই লোহার পাইপটির সংযোগ হয়ে যায় ও তা থেকেই কাপড় মেলার তারটি বিদ্যুৎবাহী হয়ে পড়ে।

সেই তারেই কাপড় মেলতে গিয়ে বিপত্তি হয়েছে বলে মনে করছেন প়ড়শিরা। দুর্ঘটনার পরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এমন দুর্ঘটনার খবর আসে মাঝেসাঝেই। বার বার নানা ভাবে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চালিয়েও এই ধরনের প্রবণতা একেবারে বন্ধ করা যাচ্ছে‌ না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন