ফাইল চিত্র।
দু’বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিলেন এক তরুণী। মঙ্গলবার ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইনের কালীনগর ষ্টেশনের কাছে ঘটনাটি ঘটে। ওই তরুণী মমতা চূর্ণকরের (২৮) বাবার অভিযোগ, পণের জন্য শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁর মেয়ে। রেললাইনের পাথরে লেগে মারা গিয়েছে শিশুটিও। জামাই-সহ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির পাঁচ জনের নামে অভিযোগ করেছেন পূর্বস্থলী ১ ব্লকের জালাহাটি দাসপাড়া কলোনির বাসিন্দা অনিল দাস। স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে তিন বছর আগে মমতার সঙ্গে পেশায় তাঁতশ্রমিক বিকাশ চূর্ণকরের বিয়ে হয়। নিজেরাই পছন্দ করে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। মমতার পরিবারের দাবি, প্রথমে আপত্তি থাকলেও পরে বিয়ে মেনে নেন তাঁরা। তবে বিয়ের পর থেকেই টাকার জন্য মেয়ের উপর চাপ দিত শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা। ধাপে পঞ্চাশ হাজার টাকা, ভরি তিনেক সোনার গয়না ও নানা আসবাবপত্র দেন তাঁরা। তার পরেও সম্প্রতি আরও টাকার জন্য মেয়ের উপর জামাই ও তাঁর পরিবারের লোকজনেরা চাপ দিত বলে অভিযোগ। তবে সেই দাবি না মেনে তাঁরা মমতাকে খালি হাতেই শ্বশুরবাড়ি পাঠান বলে অনিলবাবুর দাবি। এরপর থেকেই শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চরমে পৌঁছয় বলে তাঁদের অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ দিন বেলা দশটা নাগাদ বাপের বাড়ি যাচ্ছি বলে ছেলে পিন্টুকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে যান মমতা। বাপের বাড়ি না গিয়ে তিনি পৌঁছন কাছাকাছি কালীনগর স্টেশনে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্ল্যাটফর্ম থেকে একটি চলন্ত লোকাল ট্রেনের সামনে ছেলেকে নিয়ে ঝাঁপ দেন তিনি। ওই ট্রেনের ধাক্কাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। কিছুটা দূরে পাথরে ছিটকে পরে দু’বছরের পিন্টু। ঘটনাস্থলে মারা যায় সেও। মমতার ভাই অমিত দাসের অভিযোগ, ‘‘শ্বশুরবাড়িতে দিদির উপরে মারাত্মক অত্যাচার করা হত। সেই কারণেই দিদি ভাগ্নেকে নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আমরা জামাইবাবু ও তাঁর পরিবারের লোকজনেদের চরম সাজা চাই।’’