চিন্তন শিবিরে রাহুল সিংহ।—নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের প্রশ্রয়ে কাঁকসার বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বাস করছে বুধবার দুর্গাপুরে দলের চিন্তন বৈঠকে যোগ দিতে এসে এই অভিযোগ সরব হলেন বিজেপি নেতারা। বৈঠক শেষে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ জানান, দলের পক্ষ থেকে জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের কাছে বিষয়টি নিয়ে দরবার করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয়ের চর ঘেঁষে বন বিভাগের জমি এবং সরকারি পতিত জমিতে বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে বাস করছেন। ওই বাসিন্দাদের থেকেই জানা গিয়েছে, সীমান্ত পেরিয়ে প্রথমে সীমান্ত ঘেঁষা জায়গায় আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে কাজের সন্ধানে ছড়িয়ে পড়েন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। এ ভাবেই গত কয়েক বছরে বেশ কিছু পরিবার কাঁকসায় এসেছেন। পুরুষেরা চাষবাস করেন। কেউ কেউ স্থানীয় কারখানায় কাজ করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে এ নিয়ে কখনও কোনও বিরোধিতা করা হয়নি। ক্ষমতাসীন দল ওই সব মানুষজনকে থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে রেশন কার্ড, ভোটার কার্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ায় বলে বিরোধী দল সব সময় অভিযোগ করে এসেছে।
তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য তথা প্রাক্তন কাঁকসা ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী বলেন, “অনুপ্রবেশকারী কেউ আছেন কি না, তা দেখবে প্রশাসন। তবে আমাদের কেউ বেআইনি কাজে জড়িত কি না, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।” তাঁর অভিযোগ, বাম সরকারের আমলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। পালাবদলের পরে নতুন করে কেউ আসেননি। সিপিএমের প্রাক্তন কাঁকসা জোনাল সম্পাদক বীরেশ্বর মণ্ডল আবার বলেন, “একেবারে ভিত্তিহীন অভিযোগ। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ থেকে এসে অনেকেই কাঁকসার বিভিন্ন জায়গায় বসতি গড়েছেন। তবে আমরা কোনও বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর পাশে কখনও দাঁড়াইনি। অর্থের বিনিময়ে এমন কাজ করতে সিদ্ধহস্ত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।”
তাঁরা বিষয়টি সহজে ছাড়বেন না বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। দল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে এ নিয়ে রাহুল সিংহের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। রাহুলবাবু বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। শুনেছি, সরকারি পাট্টা পাওয়া জমিও অর্থের বিনিময়ে বাইরে থেকে আসা লোকজনকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এ সব চলতে দেওয়া যাবে না। অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের কাছে দরবার করবে দল।”