ঘটনাস্থলে আসানসোলের মেয়র। নিজস্ব চিত্র।
শেষমেশ মেয়র হস্তক্ষেপে শুক্রবার আসানসোল জেলা আদালত ভবন তৈরির কাজ শুরু হল। পরপর তিন দিন ধরে কাজ বন্ধ ছিল। অভিযোগে ওঠে সিন্ডিকেট জুলুমের জেরেই কাজ বন্ধ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থা। সূত্রের খবর, গোটা ঘটনাটি জেনে নজরে আসতেই জিতেন্দ্রবাবুকে ফের যাতে কাজ শুরু করা যায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর সেপ্টেম্বরে আসানসোলে নতুন এই আদালত ভবনটি তৈরির বরাত পায় ঠিকাদার সংস্থাটি। কাজ শুরু হয় অক্টোবরে। এক বছরের মধ্যে তা শেষ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর। গোটা কাজের জন্য খরচ ধরা হয় প্রায় সাড়ে ন’কোটি টাকা। ঠিকাদার সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্রুত গতিতেই কাজ চলছিল।
সমস্যা শুরু হয় ১ জানুয়ারি, সোমবার বিকেল থেকে। অভিযোগ, ওই দিন পাঁচটি মোটরবাইকে চড়ে নির্মীয়মাণ ভবনে এসে হাজির হয় কিছু লোকজন। শ্রমিক-কর্মীদের তারা জানিয়ে দেয়, কাজ করতে হলে নির্মাণ সামগ্রী নিতে হবে তাদের কাছ থেকেই। না হলে এখানে কাজ করা যাবে না— এই হুমকি দিয়ে সেদিনকার মতো ফিরে যায় তারা। মঙ্গলবার সকালে ঠিকা শ্রমিকেরা কাজে গেলে ফের ওই সব লোকজন ফের হাজির হয়ে ধমক দেয়। তারপরই কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকা সংস্থাটি। ঠিকা সংস্থার কর্ণধার সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায় সমস্যা সমাধানে দ্বারস্থ হন প্রশাসনের। পূর্ত দফতরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও বুধ ও বৃহস্পতিবারেও কাজ শুরু কর যায়নি। ঠিকাকর্মীরা জানান, তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।
এরপরই গোটা বিষয়টি নজরে পড়তেই নড়েচড়ে বসে আসানসোলের পুর প্রশাসন। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি কাজ শুরুর জন্য ওই এলাকার কাউন্সিলরকে দায়িত্ব দেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পূর্ত-দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে নির্মীয়মাণ ভবনে আসেন জিতেন্দ্রবাবু। সুপ্রিয়বাবুকে ডেকে তিনি নিরাপত্তার আশ্বাসও দিয়েছেন বলে খবর। তারপরেই মেয়রের নির্দেশে ফের কাজ শুরু করে ঠিকা সংস্থাটি। এ দিন ওই আদালত চত্বর সংলগ্ন এলাকার দু’জন কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেন, কোনও ভাবেই যেন ভবন তৈরির কাজ বন্ধ না হয়।
ফের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি ঠিকা সংস্থার কর্ণধার সুপ্রিয়বাবুও। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়রের উপস্থিতিতে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি আর কোনও বাধা আসবে না।’’ মেয়রের কাছ থেকে নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে খুশি আসানসোলের মুখ্য কার্যনির্বাহী বাস্তুকর ভজন সরকারও। এ দিন কাজ শুরুর পরে জিতেন্দ্রবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলের কোথাও উন্নয়নের কাজে ব্যাঘাত করতে দেওয়া হবে না।’’ তবে তিন দিন কেন কাজ বন্ধ থাকল, সে নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি মেয়র।