অভাব টপকে ডাক্তার হতে চায় সাহেব

এলাকায় ভাল চিকিৎসক নেই, সেই জন্য ডাক্তার হতে চায় শক্তিগড়ের সাহেব মোল্লা। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৬৩ পাওয়ার পর, ডাক্তারিতে সুযোগ পেলেও অর্থই যে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, এমন আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁর পরিবার। কার্যত সাহেবের সাফল্যে উল্লসিত হয়েও, তাঁর উচ্চ শিক্ষার খরচের কথা ভেবে রাতের ঘুম উড়ে গেছে পেশায় ফেরিওয়ালা, সাহেবের বাবা সিরাজুল হক মোল্লার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০২:০৮
Share:

সাহেব মোল্লা। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় ভাল চিকিৎসক নেই, সেই জন্য ডাক্তার হতে চায় শক্তিগড়ের সাহেব মোল্লা। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৬৩ পাওয়ার পর, ডাক্তারিতে সুযোগ পেলেও অর্থই যে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, এমন আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁর পরিবার। কার্যত সাহেবের সাফল্যে উল্লসিত হয়েও, তাঁর উচ্চ শিক্ষার খরচের কথা ভেবে রাতের ঘুম উড়ে গেছে পেশায় ফেরিওয়ালা, সাহেবের বাবা সিরাজুল হক মোল্লার।

Advertisement

বছর চারেক আগে, মেয়ে সাহেবার বিয়ে দেবার পরই সংসারে অভাব বেড়েছে। কেমন করে দিন চলে, সে কথাই বলছিলেন সিরাজুল। যে দেড়-দু বিঘে জমি রয়েছে, তাতে চাষ করে পরিবারের সকলের মুখে দু’বেলা খাবার জোগানো ক্রমেই যে কঠিন হয়ে উঠছে বলছিলেন তিনি। নিরুপায় হয়েই, বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাপড় ফেরি শুরু করেছেন সিরাজুল। পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই সিরাজুলের পাশে তাই দাঁড়াতে চায় ছেলে সাহেব।

উচ্চমাধ্যমিকে সাহেবের এই সাফল্যে খুশি স্থানীয় ও বড়শূল সিডিপি বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। তাঁদের সাহায্যেই পড়াশুনা সম্ভব হয়েছে তাঁর। শিক্ষক সুশান্ত মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, “সাহেব আমাদের স্কুলে ক্লাস ফাইভে ভতির্র্ হয়েছিল। বরাবরই ভাল রেজান্ট করতো। তা ছাড়া, অ্যাথলেটিক্সের দিকেও ওর টান ছিল। অর্থাভাব আর মফফ্সলের স্কুলে পড়েও ও যে রেজাল্ট করেছে তাতে আমরা গর্বিত।” সাহেবের মা জাহিমা মোল্লা বলেন, “ক্লাস ওয়ান থেকেই আমার ছেলে লেখাপড়ায় নিয়ে খুবই সচেতন। সব ক্লাসেই ও প্রথম হতো। তবে মাধ্যমিকে রেজাল্টটা একটু খারাপ হয়েছিল। সেবার ৬২৫ পেয়েছিল কম পড়ার জন্য। এবারও লেখাপড়া নিয়ে বেশি সময় দিতে পারলে ওর রেজাল্ট আরও কিছুটা ভাল হতো।”

Advertisement

সংসারের অভাব সত্ত্বেও সাহেব চায় ডাক্তার হয়ে মানুষের কাজে লাগতে। বাবার পাশে দাঁড়াতে। তাঁর কথায়, “এলাকায় কোনও চিকিৎসক নেই। রাতে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে সমস্যা দেখা দেয় তাঁর চিকিৎসা নিয়ে। আমি নিজে ডাক্তার হয়ে তাই সেই সমস্যা দূর করতে চাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন