অভাব পেরিয়ে নজর আরও ভাল ফলে

ফুটবল নয়, ক্রিকেটই নেশা শুভমের। ছোটবেলা থেকেই টিভিতে ক্রিকেট চললেই সামনে দাঁড়িয়ে পড়ত সে। তবে এখন আর ক্রিকেট নয়, উচ্চশিক্ষায় ধ্যান-জ্ঞান শুভম মুখোপাধ্যায়ের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০১:১৩
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

ফুটবল নয়, ক্রিকেটই নেশা শুভমের। ছোটবেলা থেকেই টিভিতে ক্রিকেট চললেই সামনে দাঁড়িয়ে পড়ত সে। তবে এখন আর ক্রিকেট নয়, উচ্চশিক্ষায় ধ্যান-জ্ঞান শুভম মুখোপাধ্যায়ের।

Advertisement

দুর্গাপুরের গোপালমাঠের সুজোড়া প্লটের বাসিন্দা শুভম এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৩০ পেয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই গোপালমাঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুভমের। এই স্কুল থেকেই মাধ্যমিকে ৬২২ নম্বর পেয়েছিল সে। একটি বেসরকারি কলেজে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন শুভমের বাবা কাজলবাবু। সামান্য আয়ে কোনও মতে সংসার চলে। মা স্বপ্নাদেবী টিউশন দেন। কাজলবাবু বলেন, “এত দিন মামারবাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করত শুভম। কিন্তু আর কত দিন? কেউ যদি সাহায্য করেন তাহলে কৃতজ্ঞ থাকব।”

শুভমের মামা তীর্থময় চট্টোপাধ্যায় রেলকর্মী। এত দিন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বন্ধুরা, স্কুলের শিক্ষকেরা। তবে এবার উচ্চশিক্ষার খরচ কিভাবে জুটবে তা নিয়েই চিন্তায় বাড়ির সকলেই। শুভম বলে, “পড়াশোনা থমকে গেলে জীবনও থমকে যাবে। ক্রিকেট তো বটেই। আমি চাই আরও অনেক পড়াশোনা করতে। আশা করি, স্বপ্ন সফল হবে। কেউ এগিয়ে আসবেন।”

Advertisement

এগিয়ে যাওয়ার পথে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে ইন্দ্রাণী ঘোষও। বাবা খবরের কাগজের হকার। সামান্য আয়। বসবাস অন্যের দেওয়া কোয়ার্টারে। তবু চিকিৎসক হওয়াই পাখির চোখ ইন্দ্রাণীর। এ বার মাধ্যমিকে ৫৪৪ নম্বর পেয়েছে সে। চারটি বিষয়ে নম্বর ৮০-র উপরে।

দুর্গাপুর বি-জোন স্টিল টাউনশিপ গার্লস হাইস্কুলের ওই ছাত্রীর গণিতে ৯৫, বাংলা ৮০, জীবন বিজ্ঞান ৮০ এবং ভুগোলে ৮০ নম্বর পেয়েছে। বাবা অজয় ঘোষ খবরের কাগজের হকার। মা টুম্পাদেবী গৃহবধূ। বোন সনিয়া সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। আদি বাড়ি বাঁকুড়ার বড়জোড়ার রাজমাধবপুরে। কিন্তু কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ধরেই অজয়বাবুদের দুর্গাপুরে বসবাস। তিনি বলেন, “আমার আয় অতি সামান্য। মেয়ে পড়াশোনায় খুব ভালো। কী ভাবে যে ওর উচ্চশিক্ষা হবে জানি না। অন্যের সহযোগিতা না পেলে মুশকিলে পড়ব।” একই কথা জানিয়েছে ইন্দ্রানীও। তার কথায়, “আমি চিকিৎসক হতে চাই। কিন্তু আমাদের পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য কোথায়?” ভাল ফল করেও এখন শুধু এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ইন্দ্রাণীর মনে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement