দেখা নেই নির্মাণকর্মীদের। বৃহস্পতিবার আসানসোলে তোলা নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয় বৃহস্পতিবার থেকে ফের কাজ শুরু হবে আসানসোল জেলা আদালতের নতুন ভবনের। কিন্তু সিন্ডিকেট-হুমকির মুখে পরপর তিন দিন ধরে বন্ধই রইল কাজ। ঠিকাদার সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, উপযুক্ত নিরাপত্তা না মিললে কাজ শুরু করা সম্ভব নয়।
গত বছর সেপ্টেম্বরে আসানসোলে নতুন এই আদালত ভবনটি তৈরির বরাত পায় ঠিকাদার সংস্থাটি। কাজ শুরু হয় অক্টোবরে। এক বছরের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা। গোটা কাজের জন্য খরচ ধরা হয় প্রায় সাড়ে ন’কোটি টাকা। ঠিকাদার সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্রুত গতিতেই কাজ চলছিল।
সমস্যা শুরু হয় সোমবার বিকেল থেকে। অভিযোগ, সে দিন পাঁচটি মোটরবাইকে চড়ে নির্মীয়মাণ ভবনে এসে হাজির হয় কিছু লোকজন। শ্রমিক-কর্মীদের তারা সাফ জানায়, কাজ করতে হলে নির্মাণ সামগ্রী নিতে হবে তাদের কাছ থেকেই। না হলে এখানে কাজ করা যাবে না— এই হুমকি দিয়ে সেদিনকার মতো ফিরে যায় তারা। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ঠিকা শ্রমিকেরা কাজ শুরু করতে গেলে ফের ওই সব লোকজন ফের হাজির হয়ে ধমক দেয়। তারপরই কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকা সংস্থাটি। মঙ্গল, বুধের পর বৃহস্পতিবারেও কাজ শুরু হয়নি।
সমস্যা সমাধানে ঠিকা সংস্থার কর্ণধার সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায় পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের দ্বারস্থ হন। তারপরেই পূর্ত দফতরের আসানসোলের মুখ্য কার্যনির্বাহী বাস্তুকার ভজন সরকার আশ্বাস দেন, ‘‘সমস্যার কথা শুনেছি। সমস্যা মিটিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে যেন কাজ শুরু হয় তার ব্যবস্থা করছি।’’ যদিও বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে কোনও নির্মাণকর্মীকে দেখা যায়নি। সুপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘প্রশাসনকে জানিয়েছি নিরাপত্তা না মিললে কাজ করবো না।’’ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কাজ কেন শুরু করা গেল না জানতে চাওয়া হলে ভজনবাবুর দাবি, ‘‘সমস্যা মিটে গিয়েছে। শুক্রবার থেকে অবশ্যই কাজ শুরু হবে।’’ বেশ কয়েকজন নির্মাণকর্মী জানান, হুমকির জেরে তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। দিনের পর দিন কাজ বন্ধ থাকলে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন ওই কর্মীরা।
গোটা বিষয়টি নজরে পড়তেই নড়েচড়ে বসে আসানসোলের পুর প্রশাসনও। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘কোনও রকম বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই যাতে ফের ভবনটির কাজ শুরু করা যায়, তার জন্য ওই এলাকার কাউন্সিলরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’