আশ্বাসই সার, জামুড়িয়ায় আঁধারে দুই পুর এলাকা

পুরসভা গঠনের পরে কেটে গিয়েছে উনিশ বছর। তখনই পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল আদিবাসী গ্রাম হরিপুরা ও হুবডুবি। দু’টি গ্রামের বাইরে পড়ে রয়েছে পুরনো বিদ্যুতের খুঁটি। কিন্তু বিদ্যুৎ আসেনি। ভোট আসে, ভোট যায়। আবেদন আর তাতে নেতাদের আশ্বাসই সার। প্রশাসনের নানা স্তরে বারবার আবেদনও বিফলে। কোনও কিছুতেই আঁধার কাটেনি, অভিযোগ ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:১৬
Share:

হরিপুরা গ্রামে ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।

পুরসভা গঠনের পরে কেটে গিয়েছে উনিশ বছর। তখনই পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল আদিবাসী গ্রাম হরিপুরা ও হুবডুবি। দু’টি গ্রামের বাইরে পড়ে রয়েছে পুরনো বিদ্যুতের খুঁটি। কিন্তু বিদ্যুৎ আসেনি। ভোট আসে, ভোট যায়। আবেদন আর তাতে নেতাদের আশ্বাসই সার। প্রশাসনের নানা স্তরে বারবার আবেদনও বিফলে। কোনও কিছুতেই আঁধার কাটেনি, অভিযোগ ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের।

Advertisement

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিপুরা গ্রামটি রয়েছে জামুড়িয়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। হুবডুবি রয়েছে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। দু’টি গ্রামে সব মিলিয়ে ৪০টি পরিবার বসবাস করেন। বিদ্যুৎ না থাকায় কারণে গ্রামের বাসিন্দাদের বাধ্য হয়েই রেশন দোকান থেকে কেরোসিন তেল কিনে আনতে হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক সময়েই রেশন থেকে যে কেরোসিন তেল পাওয়া যায়, তাতে সারা মাস চলে না। তখন বেশি দাম দিয়ে খোলাবাজার থেকে কেরোসিন তেল কিনতে হয়। অন্ধকার নামলেই গ্রামের ঘরে ঘরে জ্বলে ওঠে কেরোসিনের আলো। সেই আধো অন্ধকারের মধ্যেই চলে প্রতি দিনের দিন যাপন। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েন পড়ুয়ারা। এলাকার বাসিন্দা হরিপুরার শনিচর মুর্মু, হুবডুবির শর্বন মাঝির অভিযোগ, “ভোট এলেই গ্রামে আলো জ্বালাবার প্রতিশ্রুতি দেয় বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা। কিন্তু ভোট মিটে যাওয়ার পরে আর কিছুই হয় না।”

জামুড়িয়ার বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা জানান, নিয়ম অনুযায়ী পুরসভার কোনও এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে পুরসভা বিদ্যুৎ দফতরে প্রস্তাব পাঠায়। তারপর সেই এলাকায় গিয়ে সমীক্ষা করে পুরসভায় খরচের হিসেব পাঠানো হয়। পুরসভা সেই খরচ অনুমোদন করলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুদায়ন করা হয়। তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত ওই দুটি এলাকার জন্য কোনও প্রস্তাব আমাদের দফতরে এসে পৌঁছায়নি।

Advertisement

জামুরিয়া ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পূর্ণশশী রায় বিদ্যুৎ না আসার দোষ চাপিয়েছেন সিপিএম পরিচালিত জামুড়িয়া পুরসভার দিকে। তিনি বলেন, “জামুড়িয়া পুরসভার জন্মলগ্ন থেকেই ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। এলাকার বিধায়ক ও সাংসদও সিপিএমের। ওদের গাফিলতিতেই বিদ্যুৎ আসেনি ওখানে।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে জামুড়িয়ার সিপিএমর পুরপ্রধান ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “ওই এলাকার সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর সাংসদ তহবিল থেকে ওই দু’টি গ্রামের বিদ্যুত সংযোগের জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আমরা বিদ্যুৎ দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।” যদিও ওই প্রকল্পের জন্য কত টাকা খরচ হবে সেটা জানাতে পারেননি ভাস্করবাবু।

বংশগোপালবাবু এ বারও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, “ওই দুই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়া চলার কারণেই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।” আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেনের দাবি, “সমস্যার কথা শুনেছি। রাজ্য সরকারের মাধ্যমে ওই গ্রামে বিদ্যুৎ আনার ব্যবস্থা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন