কাঁকসা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র।
একশো দিনের কাজে সুপারভাইজার নিয়োগকে কেন্দ্র করে দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষে জখম হলেন জনা দশেক। বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতের বিলপাড়া এলাকায় এই অশান্তি বাধে। আহতেরা কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানি ও মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজের আগের সুপারভাইজার পদ ছেড়ে দেওয়ায় সেটি এখন ফাঁকা আছে। গ্রামেরই এক জন সেই পদ পাওয়ার জন্য পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করেছেন বলে এলাকার লোকজন জেনেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গ্রাম কমিটির কয়েক জন ওই ব্যক্তির বাড়িতে যান। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অমরপ্রসাদ মণ্ডলের দাবি, কোনও রকম আলোচনা না করেই এই সুপারভাইজার নিয়োগের চেষ্টা চলছে, এ নিয়ে তাঁদের দলের কয়েক জন কথা বলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের উপরেই পাল্টা হামলা চালানো হয়। হাঁসুয়া, লাঠি নিয়ে হামলায় তাঁদের কয়েক জন আহতও হন বলে অমরবাবুর দাবি। তিনি জানান, আহতদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শুক্রবার সকালে বিলপাড়া এলাকায় ফের অশান্তি শুরু হয়। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার মারধরের ঘটনায় যারা অভিযুক্ত, তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় গ্রামের প্রায় ৭০-৮০ জন মহিলা। মূলত দু’পক্ষের মহিলাদের মধ্যে প্রথমে বচসা, পরে গোলমাল বেধে যায়। কয়েক জনকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সংঘর্ষে আহত হয়ে বেশ কয়েক জন কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। অমরবাবু আরও অভিযোগ করেন, যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে তাঁরা সিপিএমের হয়ে এলাকায় প্রচার চালিয়েছিল।
গ্রামের বাসিন্দাদের একটি অংশের অবশ্য দাবি, গ্রামে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যেই এই সংঘর্ষ হয়েছে। নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতেই এলাকার দু’পক্ষের মধ্যে এমন অশান্তি বাধে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলও দাবি করেন, তৃণমূলের কোন্দলেই এই ঘটনা। এর সঙ্গে সিপিএমের কোনও যোগ নেই। তবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি দলের কাঁকসা ব্লক যুব সভাপতি পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “একশো দিনের কাজে সুপারভাইজার নিয়োগকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও সম্পর্ক নেই।”
কাঁকসা থানার পুলিশ জানায়, দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে।