পুরসভায় চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রয়োজনেও দেখা মেলে না কাউন্সিলরের এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার পুরপ্রধানের কাছে স্মারকলিপি দিলেন বর্ধমান শহরের সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। চিঠিতে তাঁদের স্পষ্ট দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলর জয়ন্ত দত্তকে ওই ওয়ার্ডে আর চান না তাঁরা।
ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রমোদ হরিজন, মিঠাই দাস, উত্তর বোস, পিন্টু প্রসাদদের অভিযোগ, কাউন্সিলার জয়ন্তবাবু তাঁদের জন্য কোনও সময়ই দেন না। সকালে শংসাপত্র চাইতে গেলে বলা হয় সন্ধ্যায় আসুন। সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, তিনি বাড়িতে নেই অথবা অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা প্রত্যেকেই গরিব। প্রতিদিনই কঠোর পরিশ্রম করে জীবন চালাতে হয় তাঁদের। ফলে কোনও কাজে কাউন্সিলরের দফতরে বারবার আসতে হওয়ায় সমস্যায় পড়েন তাঁরা।
ওই ওয়ার্ডেরই অশোক মণ্ডল, মানিক সরকারদের দাবি, “ওয়ার্ডের বস্তি এলাকায় পানীয় জল ও শৌচাগারের তীব্র সমস্যা রয়েছে। ভোটের সময় জয়ন্তবাবু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ওই সমস্যা দ্রুত মেটানো হবে। কিন্তু বছর ঘুরতে চললেও ওই সমস্যার দিকে নজর নেই তাঁরা। এমনকী অভিযোগ জানানোর পরেও ওয়ার্ডে ঘুরে সমস্যা কতটা তা দেখতে যেতেও রাজি নন তিনি। এ সমস্ত নানা কারণেই সোমবার পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের কাছে লিখিত ভাবে জয়ন্তবাবুর অপসারণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। স্মারকলিপিতে তাঁরা সাফ লিখেছেন, “ওয়ার্ডের সমস্যাগুলি অবিলম্বে সমাধান করুন। আমরা ওই কাউন্সিলরকে আমাদের ওয়ার্ডে আর চাই না।”
তবে অভিযোগের কথা শুনে সন্ধ্যায় জয়ন্তবাবু বলেন, “শুনেছি আমার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। কাল গিয়ে দেখব। তারপরে মন্তব্য করব।” তাঁর দাবি, “এখন তো আমার বাড়িতে প্রায় ৫০ জন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আমি তাঁদের শংসাপত্র লিখছি।” তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিরুদ্ধে স্মারকলিপি জমা পড়ার খবর শুনেই তড়িঘড়ি শংসাপত্র বিলিতে মন দিয়েছেন জয়ন্তবাবু। মানুষের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে স্মারকলিপি জমা পড়ার খবর পেয়েই তিনি তরিঘরি সার্টিফকেট বিলিতে মনোযোগ দিয়েছেন। জয়ন্তবাবুর আরও দাবি, “আমি ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য দিনরাত চেষ্টা করছি। আগে ওয়ার্ডে জল জমত। এখন জমে না কেন? ওয়ার্ডের কতটা উন্নয়ন করেছি পরে বলব।”
পুরপ্রধান স্বরূপবাবু বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখা হবে। পরের বোর্ড মিটিংয়ে ওই ওয়ার্ডের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত তা সমাধানের চেষ্টাও করব।”