ভাঙা জানালার কাচ। নিজস্ব চিত্র।
রাতে কাউন্সিলরের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল মেমারিতে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর স্বপন ঘোষালের অভিযোগ, সোমবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ ১৫ জনের একটি দল তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। না পেরে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে অশ্লীল গালিগালাজ করে এবং বাড়ির সমস্ত জানালার কাচ ভাঙচুর করে।
পরে মঙ্গলবার সকালে ওই ১৫ জনের মধ্যে ৪ জনের নাম দিয়ে মেমারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সপরিবারে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও অভিযোগে জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মেমারি থানা।
গত পুরভোটে সিপিএমকে সিপিএমকে ১৬-০য় হারানোর পরে দীর্ঘদিন ধরেই মেমারিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত। কাউন্সিলর স্বপনবাবু বরাবরই মেমারিতে পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ীর বিরোধী গোষ্ঠী বলেই পরিচিত। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে একাধিকবার দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন তিনি ও আরও কয়েকজন কাউন্সিলর। দলের কাছে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে চিঠিও পাঠিয়েছেন তাঁরা। বিরোধী কাউন্সিলরদের দাবি, বোর্ড মিটিং না ডেকে পুরপ্রধান নানা ধরনের কাজ করে চলেছেন। এই কাজের অধিকাংশই অবৈধ। তাই তাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। আর এই বিরোধী কাউন্সিলারদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বপন ঘোষাল। দিন দুয়েক আগেই পুরসভা লাগোয়া একটি বহুতল নির্মাণ ঘিরে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ ছিল, পুরসভা এবং পূর্ত দফতরের কোনও অনুমতি ছাড়াই ওই নির্মাণ চলছে। যদিও পুরপ্রধান স্বপনবাবু অভিযোগ স্বীকার করেন নি। সোমবারও পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে স্বপন ঘোষাল ও স্বপন বিষয়ীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় বলে কাউন্সিলরদের একাংশের কাছ থেকে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বাড়ি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নানা মহলের কাছে তাত্পর্যপূর্ন হয়ে উঠেছে। গোষ্টীদ্বন্দ্বের জেরেই এমনটা ঘটল কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন বিরোধীরা। বিষয়দুটি জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশও।
এ দিন কাউন্সিলর স্বপনবাবু দাবি করেন, “আমার সন্দেহ, আমাকে খুন করার চেষ্টা হচ্ছিল। শীতের রাতে সকলেই বাড়ির মধ্যে ছিলেন। তারমধ্যেই আচমকা তাণ্ডব শুরু হয়।” প্রায় ২০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চলে বলেও তাঁর দাবি। তবে এ বিষয়ে পুরপ্রধানকে ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি।