কাটোয়ায় পুকুর ভরাটের চেষ্টা রুখলেন বাসিন্দারা

পুকুর বোজানোর অভিযোগ তুলে একজোট হয়ে বাধা দিলেন বাসিন্দারা। রবিবার সকালে কাটোয়া শহরের ঘটনা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছেই পুকুরের একাংশ বুজিয়ে জমি বিক্রি হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩২
Share:

এই পুকুর নিয়েই অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।

পুকুর বোজানোর অভিযোগ তুলে একজোট হয়ে বাধা দিলেন বাসিন্দারা। রবিবার সকালে কাটোয়া শহরের ঘটনা।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছেই পুকুরের একাংশ বুজিয়ে জমি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। সেখানে পাকা দোকানঘর নির্মাণ চলছে। এ দিন সকালে পুকুরের মূল অংশ বোজানোর চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। বাধা পেয়ে মালিকপক্ষ আপাতত পিছু হঠেছে। এই পুকুর বোজানোর ঘটনায় কংগ্রেসের নেতার ভাইয়ের নামে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

কাটোয়া ১ বিএলএলআরও উজ্বল বিশ্বাস বলেন, “ওই পুকুর ভরাট করে যাঁরা দোকান নির্মাণ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় অভিযোগ করেছি। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” কাটোয়া থানার আবার দাবি, গত কয়েক মাসে জলাশয় ভরাট নিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে কোনও অভিযোগ মেলেনি।

Advertisement

কাটোয়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চৌরঙ্গি মোড়ে কাটোয়া-দাঁইহাট রোডের পাশে রয়েছে এই পুকুরটি। পানুহাট মৌজায় এই পুকুরটির জায়গা ১ একর ৮৩ শতক। সেখান থেকে সামান্য দূরে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানুহাটের দেবনাথ পরিবারের কাছে থেকে শহর লাগোয়া খাজুরডিহি পঞ্চায়েত এলাকার এক কংগ্রেস নেতার ভাই ও তার এক সঙ্গী পুকুরটি কেনেন। অভিযোগ, পুকুরটি সংস্কারের পরে কিছু দিন আগে থেকে চারপাশ বোজানো শুরু হয়। মাঝে কিছু দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার ফের পুকুর বোজানো শুরু হয়। পাড়ার বাসিন্দারা শনিবার রাতে এর প্রতিবাদে এক জোট হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পাড়ার বাসিন্দা সুশীল দেবনাথ, বিপ্লব কুণ্ডু, বিশ্বনাথ দেবনাথ, অমিত দেবনাথরা এ দিন বলেন, “সকালে তিনটি ট্রাক্টরে করে মাটি ফেলতে এলে আমরা বাধা দিই। তাতেই ২০-২৫টি লরি রাস্তা থেকে পালায়।” তাঁদের আরও অভিযোগ, পুকুর ভরাট করা জায়গাগুলি কিনেছেন পাড়ার বাসিন্দারা। এ দিন সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুকুরের চার ধার বোজানো হয়ে গিয়েছে। তার উপরে রাস্তার দিকে দোকান গড়ার কাজ চলছে। কয়েকটি অস্থায়ী বাড়িও তৈরি হয়েছে। তার বাসিন্দারা জানান, ওই কংগ্রেস নেতার ভাইয়ের কাছ থেকে কাঠা প্রতি দেড়-দু’লক্ষ টাকায় জমি কিনেছেন। তবে এখনও রেজিস্ট্রি হয়নি বলে তাঁদের অনেকে জানান।

পাড়ার বাসিন্দারা জানান, তাঁদের কাছে অভিযোগ পেয়ে কাটোয়া পুরসভার বাস্তুকার দফতরের কর্মী এসে পুকুর ভরাট আটকানোর জন্য চেষ্টা করেছেন। কাটোয়ার কংগ্রেস পুরপ্রধান শুভ্রা রায় বলেন, “গায়ের জোরে পুকুর ভরাট হচ্ছে। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।”

কংগ্রেস নেতার ভাই বলেন, “আমার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। এ ব্যাপারে দাদাও কিছু জানে না। আজকের পর থেকে মাটি ফেলব না। আইন মেনে কাজ করব।” কংগ্রেস নেতা বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। কিছু বলতে পারব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন