কালনায় পলিথিন জমে ডাঁই, সমস্যায় নিকাশি

পলিথিন দূষণে জেরবার কালনার আনাচ কানাচ। নালা ও জলাশয়ের মধ্যে পলিথিন ব্যাগ জমে উপচে পড়ছে আবর্জনা। কালনা পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডেই কম বেশি চোখে পড়ছে এই ছবি। বিক্রেতাদের দাবি, প্রশাসনের খামতির জন্যই আর্থিক সত্ত্বেও তাঁদের পলিথিন ব্যাগ দিতে হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৩৯
Share:

প্লাস্টিকে ভরেছে শহর। —নিজস্ব চিত্র।

পলিথিন দূষণে জেরবার কালনার আনাচ কানাচ। নালা ও জলাশয়ের মধ্যে পলিথিন ব্যাগ জমে উপচে পড়ছে আবর্জনা। কালনা পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডেই কম বেশি চোখে পড়ছে এই ছবি। বিক্রেতাদের দাবি, প্রশাসনের খামতির জন্যই আর্থিক সত্ত্বেও তাঁদের পলিথিন ব্যাগ দিতে হচ্ছে।

Advertisement

২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৪০ মাইক্রনের কম ঘনত্বের পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল পরিবেশ দফতর। বলা হয়েছিল, ৪০ মাইক্রনের বেশি ঘনত্বের ব্যাগ ক্রেতাদের দাম দিয়ে কিনতে হবে। তখন পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার অনেকটাই কমে গিয়েছিল। বড় দোকানগুলিতে নজরদারি চালাত প্রশাসন। কিন্তু মাস খানেক পরেই ফের বিনামূল্য পলিথিন ব্যাগ দেওয়া শুরু হয়। ব্যবহারের পর সেগুলির ঠাঁই হয় নিকাশি নালা কিংবা জলাশয়ে। সামান্য বৃষ্টিতেই নালা উপচে জল উঠে আসে রাস্তার উপর। গত বর্ষাতেও বেহাল নিকাশির কারণে জল থই থই অবস্থা হয়েছিল কালনা জুড়ে। কিন্তু পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা সন্ধ্যা ঘোষের ক্ষোভ, “কালনায় পলিথিন দূষণের সমস্যা নতুন নয়। রাস্তায় বের হলেই দেখি এ দিক ও দিক পলিথিন ব্যাগ পড়ে রয়েছে। সাধারণ মানুষ কিংবা পুরসভা কেউই সচেতন নয়।” কালনার আরেক বাসিন্দা রমেশ সরকার বলেন, “বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে কালনায় বহু পর্যটক আসেন। কিন্তু পলিথিন দূষণের কারণে তাঁদের কাছে আমাদের শহর সম্পর্কে ভুল বার্তা যায়।” স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের আবার অভিযোগ, বিকল্প কোনও মাধ্যম না থাকার কারণেই তাঁরা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করছেন।

Advertisement

শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, সামান্য পরিমাণ জিনিস কিনলেও ক্রেতারা পলিথিন চাইছেন। তার উপর যে পলিথিন ব্যাগগুলির ব্যবহার হচ্ছে সেগুলির বেশির ভাগই ৪০ মাইক্রনের কম ঘনত্বের। প্রয়োজন মিটলেই এগুলির ঠাঁই হচ্ছে পাড়ার নালা, জলাশয়, রাস্তার পাশে। শহরের একাধিক বিক্রেতা জানান, পলিথিন ব্যাগ বাজার থেকে কিনে বিনামূল্য দিতে হয়। পলিথিন ব্যাগ বন্ধ করার পক্ষে সওয়াল করে তাঁদের দাবি, পলিথিন ব্যাগ না দিলে ক্রেতারা জিনিস নিতে চান না। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী রমানাথ হাজরা বলেন, “পলিথিন ব্যাগ না দিলে খদ্দের কমে যাবে। তাই আমরা আর্থিক ক্ষতি সত্ত্বেও পলিথিন দিতে বাধ্য হই।” ব্যবসায়ীদের পরামর্শ, প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে গোটা পুর এলাকায় পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করুক। তা হলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে বাজারে আসার সময় ব্যাগ নিয়ে আসবে। সব্জি ব্যবসায়ী ফিরাজ শেখ বলেন, “ক্রেতারা দীর্ঘ দিন ধরে পলিথিনে ব্যাগে জিনিস নিয়ে যেতে অভ্যস্ত। হঠ্যাত্‌ করে পুরনো অভ্যাস বদলানো যাবে না। আস্তে আস্তে পলিথিন তোলার ব্যবস্থা করা দরকার।” শহর জুড়ে পলিথিন দূষণের কথা স্বীকার করে পুরসভার চেয়ারম্যান বিশ্বজিত্‌ কুণ্ডু বলেন, “আগে পলিথিন দূষণ নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান চালানো হয়েছে। ফের সেই কাজ শুরু করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন