বর্ধমানে সূর্যকান্ত মিশ্র।
পুর ভোট, পঞ্চায়েত ভোটে একের পর এক বিপর্যয়ের পরে লোকসভা ভোটের মুখে প্রতিরোধের ডাক দিল বামফ্রন্ট। কোথাও কর্মীদের একজোট হয়ে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবার কোথাও প্রত্যেক বুথে প্রতিরোধের কথা বললেন সিপিএম নেতারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের উৎসব ময়দানে নির্বাচনী সভা ছিল বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের। সেখানে দলীয় কর্মীদের তিনি বলেন, “তৃণমূল যেমন করে পঞ্চায়েত বা পুরসভায় ভোট করেছিল, এবার তা পারবে না। উত্তরবঙ্গের যে ক’টি আসনে ভোট হয়েছে, তা থেকে প্রমাণ হয়েছে সন্ত্রাসের মধ্যেও মানুষ লড়াই করেছেন।” এ দিনই কালনায় এসেছিলেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব। তিনিও কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলকে একজোট করতে বলেন। বলেন, “বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই মানুষদের ভুল ভাঙান। এবং তৃণমূলের যে অংশ সরকারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ সেটাকে এক করতে হবে।”
কালনায় চলছে গৌতম দেবের সভা।
দলীয় কর্মীদের সূর্যকান্তবাবুর নির্দেশ, “মনে রাখবেন, আমাদের আসল কাজ হল, যে দলই করুন না কেন মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।” তাঁর দাবি, “আমরা কোনও পরিস্থিতিতে চোখে-চোখ রেখে কথা বলতে ভয় পাইনা। তাই আমাদের উপরই আক্রমন নামে।” গৌতমবাবুও হারের পর্যালোচনা করতে গিয়ে বলেন, ভোটারদের একটা বড় অংশ ওই দুই নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে ছিলেন না। কারণ নন্দীগ্রাম, নেতাই নানা বিভিন্ন বিষয়ে অপপ্রচার হয়েছে। সিপিএমকে শিক্ষা দিতে চেয়ে অনেকে বুকে ব্যাথা নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। এরকম ১৫-২০ লক্ষ মানুষ না সরলে মমতা ক্ষমতায় আসতেন না।”
তৃণমূল বিজেপি বা কংগ্রেসের নানা সমালোচনার পাশাপাশি এ দিন উৎসবে ময়দানে মঞ্চে উপস্থিত সিপিএম নেতাদের মুখে শোনা গিয়েছে বর্ধমান শহরের বুথে-বুথে প্রতিরোধের কথা। দলের বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “নির্বাচন কমিশন যাতে সুষ্ঠু ভাবে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে আমাদের আস্থা রয়েছে। তবে মানুষকে ভোটের দিন, সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ওরা পুরসভা নির্বাচনে ভোট লুঠ করেছিল। ওদের শিক্ষা দিতে হবে। গোটা রাজ্য, গোটা দেশ বর্ধমান শহরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।” পুরভোটে প্রতিটি ওয়ার্ডেই হেরেছিল বামেরা। সে প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বিগত বাম পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান তথা সভার সভাপতি আইনূল হক বলেন, “ওরা ভোট লুঠ করেছিল। আমরা বর্ধমান শহরের মানুষকে চিনি। তাঁরা গনতন্ত্রের পক্ষে। ২০১১ সালে তাঁরা বিধানসভা ভোটে আমাদের ছেড়ে গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু আমরা নিজেদের সংশোধন করে নিচ্ছিলাম। মানুষও আমাদের উন্নয়নের ডাকে সাড়া দিচ্ছিলেন। গত পুরভোটে যদি ভোট লুঠ না হতো, সন্ত্রাস না হতো, তাহলে আমরাই জয়ী হতাম। তবে এ বার মানুষ তৈরি।”
—নিজস্ব চিত্র।