মেদিনীপুর কলেজে পাস কোর্স চালু রাখার দাবিতে সরব হল শাসক-বিরোধী সব ছাত্র সংগঠনই। সোমবার কলেজের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছে এসইউসি। ছাত্র পরিষদও কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিপত্র জমা দিয়েছে। বস্তুত, মেদিনীপুর কলেজ স্বশাসিত কলেজের অনুমোদন পেয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ, ২০১৪-’১৫ থেকে পরবর্তী ছ’বছরের জন্য এই অনুমোদন দিয়েছে ইউজিসি। ফলে, এই কলেজটি আর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থাকবে না। সিলেবাস তৈরি থেকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি, পরীক্ষা নেওয়া, সবই করবেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ছাত্রছাত্রীদের শংসাপত্র দেবে।
মেদিনীপুরের এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৭৩ সালে। তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। ১৯৮৬ সালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে। তারপর কলেজটি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চলে আসে। রাজ্যের প্রথম সারির কলেজগুলোর মধ্যে মেদিনীপুর কলেজ অন্যতম। ২০০৪ সালে এই কলেজ ন্যাকের মূল্যায়নে এ-প্লাস গ্রেড পায়। রাজ্যের মধ্যে প্রথম মেদিনীপুর কলেজই এ-প্লাস গ্রেড পেয়েছিল। ২০১২ সালে পুনর্মূল্যায়ন হয়। এখন অবশ্য এ-প্লাস গ্রেড বলে কিছু নেই। পুনর্মূল্যায়নে গ্রেড ব্যবস্থার কিছু পরিবর্তন করে নম্বর চালু হয়। ওই বছর ন্যাকের মূল্যায়নে কলেজ ৪ নম্বরের মধ্যে ৩.৫৮ নম্বর পায়। যা এ-গ্রেড হিসেবে ধরা হয়। মেদিনীপুর কলেজে সবমিলিয়ে ২১টি বিষয়ে অনার্স পড়ানো হয়। সঙ্গে রয়েছে পাস কোর্স। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা সবমিলিয়ে সাড়ে চার হাজার। এরমধ্যে পাস কোর্সের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এক হাজার। কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেহেতু স্বশাসিত কলেজের অনুমোদন মিলেছে, সেহেতু কলেজে আর পাস কোর্স চালু রাখা যাবে না। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছে শাসক- বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুল বলেন, “আমরা পাস কোর্স চালু রাখার দাবি জানিয়েছি।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধ মণ্ডল বলেন, “পাস কোর্স চালু রাখতেই হবে। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে এই দাবিতে আমরা আন্দোলনও করছি।” সোমবার কলেজে এক বৈঠক হয়। কলেজ সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত শিক্ষকেরা পাস কোর্স চালু না রাখার পক্ষেই মতপ্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, স্বশাসিত কলেজে সাধারণত পাস কোর্স চালু থাকে না। আজ, মঙ্গলবার ফের এক বৈঠক ডাকা হয়েছে। মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ সুধীন্দ্রনাথ বাগ বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।”