খেলার মাঠে শহরকে টেক্কা দিচ্ছে গ্রাম

শহুরে পরিকাঠামো নেই। হাতের নাগালে নেই কেতা-দুরস্ত ট্রেনার বা কোচিং ক্যাম্প। তবুও মাঠের সবুজ ঘাসে শহরকে টেক্কা দিচ্ছে গ্রাম। অন্তত বর্ধমানের খেলার মাঠের চ্যাম্পিয়ান-তালিকার দিকে তাকালে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বর্ধমানের শহরের স্কুলগুলি অংশ নিলেও জিতছে গ্রামের স্কুলগুলিই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩৪
Share:

শহুরে পরিকাঠামো নেই। হাতের নাগালে নেই কেতা-দুরস্ত ট্রেনার বা কোচিং ক্যাম্প। তবুও মাঠের সবুজ ঘাসে শহরকে টেক্কা দিচ্ছে গ্রাম। অন্তত বর্ধমানের খেলার মাঠের চ্যাম্পিয়ান-তালিকার দিকে তাকালে এমনটাই দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বর্ধমানের শহরের স্কুলগুলি অংশ নিলেও জিতছে গ্রামের স্কুলগুলিই। রাইপুর কাশিয়াড়া, হাটগোবিন্দপুর মানগোবিন্দ চৌধুরী হাইস্কুল, অথবা বড়শূল সিডিপি, সেহারাবাজার সিকে ইন্সটিটিউটের মত গ্রামের স্কুলগুলির সাফল্য তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো।

গতবছর শেষের দিকে বর্ধমান জেলা রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে মহকুমার স্কুল ফুটবলে খেতাব জেতে বড়শূল সিডিপি। শেষ চারে উঠেছিল রাইপুর কাশিয়াড়া। সম্প্রতি সুব্রত কাপের মহকুমা ও জেলা পর্যায়ে অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগে জিতে মূল পর্বে পৌঁছে গিয়েছে সেহারাবাজার সিকে ইন্সটিটিউশন।

Advertisement

অন্যদিকে জেলা বিদ্যালয় সংসদ আয়োজিত বর্ধমান সদর জোন স্কুল ফুটবলের অনূর্ধ্ব ১৭ ও ১৯ বিভাগে খেতাব জিতল হাটগোবিন্দেপুর এমসি হাইস্কুল। অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগে রানার্সও হয়েছে গ্রামের স্কুল রাইপুরি কাশিয়াড়া। শহরের স্কুলগুলির ঝুলিতে সাফল্য মাত্র দু’টি। সদর জোন ফুটবলের অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগে রাজ কলেজিয়েট স্কুল রানার্স হয় এবং অনূর্ধ্ব ১৪-র খেতাব জেতে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুল।

গ্রামের স্কুলগুলির এই সাফল্যের কারণ বলতে গিয়ে হাটগোবিন্দপুরের দুই শিক্ষক তরুণ পাকড়ে ও সোমনাথ গুপ্ত দু’জনেই জানান, তাঁরা পড়ুয়াদের নিয়মতি মাঠে নিয়ে যান। এমনকী ভর্তির ক্ষেত্রেও খেলাধূলায় পারদর্শীদের অনেক ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

শুধু তাই নয়, স্কুলের খেলা থাকলে পড়ুয়াদের বাস ভড়া করে মাঠেও নিয়ে যাওয়া হয়। খেলাধূলার জন্য অনেক সময় শিক্ষকরা নিজেরাই পখেটের টাকা খরচ করেন বলে জানালেন সেহারাবাজার সিকে ইন্সটিটিউটের শিক্ষক সৌমদীপ চৌধুরী। সেহারাবাজারের সাম্প্রতিক সাফল্যে আশাবাদী সৌমদীপবাবু বলেন, “এইভাবে চলতে থাকলে একদিন আমরা সুব্রত কাপের মূল পর্বেও জিততে পারি।”

বিপরীত দিকে খেলার মাঠে শহরের স্কুলগুলির যোগদান কম কেন জানতে চাওয়া হলে জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের সাধারণ সম্পাদক রবিশঙ্কর ভট্টাচার্য ও জোন সম্পাদক মির্জামল বিশ্বাস জানান, প্রতিটি স্কুলকেই নিয়মিত প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও শহরের স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকেরা মাঠে দল নামাচ্ছে না। বিশেষ করে বর্ধমান টাউন, রামাশিস হিন্দিহাই-র মত স্কুলগুলি প্রায় কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসছে না।

বধর্মান টাউন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শঙ্করপ্রসাদ নন্দীও স্বীকার করেন, “এই বছর ফুটবল প্রতিযোগিতায় আমরা যোগ দিতে পারিনি, কারণ ভাল দল তৈরি করতে পারিনি। তাই বাজে দল পাঠিয়ে স্কুলের নাম খারাপ করতে চাই নি।”

শুধু ফুটবলই নয় খো খো’তেও গ্রামের স্কুলগুলি সফল হচ্ছে। সম্প্রতি বর্ধমান সদর মহকুমা অনুর্ধ্ব ১৯ খো খো প্রতিযোগিতার ফাইনালে ভাতারের কামারপাড়া হাইস্কুল ৩৪-২০ পয়েন্টে হরিয়েছে বর্ধমান মডেল স্কুলকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন