খেলনা পিস্তল উঁচিয়ে অফিসে লুঠপাট

কাজের খোঁজে এসেছিল যুবকেরা। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র দেখতে চাইতেই ব্যাগ থেকে বেরোল পিস্তল। চাকরির সন্ধান দেওয়ার জন্য খুলে বসা অফিসের দুই কর্মীকে সেই পিস্তল দেখিয়ে ল্যাপটপ, মোবাইল, কাগজপত্র লুঠ করে নিয়ে গেল তারা।

Advertisement

বিপ্লব ভট্টাচার্য

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৩৭
Share:

অঙ্কণ: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।

কাজের খোঁজে এসেছিল যুবকেরা। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র দেখতে চাইতেই ব্যাগ থেকে বেরোল পিস্তল। চাকরির সন্ধান দেওয়ার জন্য খুলে বসা অফিসের দুই কর্মীকে সেই পিস্তল দেখিয়ে ল্যাপটপ, মোবাইল, কাগজপত্র লুঠ করে নিয়ে গেল তারা।

Advertisement

এখানেই শেষ নয়। চলে যাওয়ার সময়ে যুবকেরা ফেলে রেখে যায় পিস্তলটি। তারা যাওয়ার পরেই পুলিশ ডাকেন ওই কর্মীরা। পুলিশ এসে পিস্তলটি পরীক্ষা করে জানাল, সেটি নেহাতই খেলনা। স্রেফ ভয় দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গির আমবাগান এলাকার ওই অফিস থেকে জিনিসপত্র লুঠ করে দুষ্কৃতীরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমবাগান এলাকার ৬ নম্বর স্ট্রিটে রয়েছে ওই বেসরকারি কনসালট্যান্সি অফিস। এ দিন দুপুরে সেই অফিসে বসেছিলেন চন্দনকুমার রায় ও তাঁরই সহযোগী মধু কুমারী। চন্দনবাবুর কথায়, দুপুর দেড়টা নাগাদ তাঁদের অফিসে আসেন দুই যুবক। এক জনের কাঁধে একটি ব্যাগ ছিল। তারা চন্দনবাবুদের কাছে বিভিন্ন বেসরকারি কল সেন্টারে নিয়োগ সম্পর্কে জানতে চায়। সেই মতো চন্দনবাবু ও মধুদেবী কলসেন্টার সম্পর্কিত বিশদ তথ্য ওই দু’জনকে বোঝাতে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা চলে। চন্দনবাবু অভিযোগ করেন, ওই দু’জনকে সব কিছু বোঝানোর পরে তাদের কাছ থেকে বায়োডেটা চাওয়া হয়। এক জন কাঁধের ব্যাগ থেকে কাগজপত্র বের করার নামে একটি পিস্তল বের করে। তার পরে সেটি সরাসরি তাঁর দিকে তাক করে।

Advertisement

পিস্তল দেখেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় দুই কর্মীর। চন্দনবাবু বলেন, ‘‘ওই দু’জন আমাদের অফিস থেকে ল্যাপটপ, চার্জার ও আমার মোবাইল তুলে নেয়।’’ মধুদেবীর দাবি, তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোটা ঘটনা ঘটে যায়। তাতে তাঁরা হকচকিয়ে যান। চন্দনবাবুর দিক থেকে এ বার পিস্তল তাক করা হয় তাঁর দিকে। মধুদেবী জানান, তাঁর মোবাইলটিও কাড়তে যায় ওই দুষ্কৃতীরা। এমনকী, তাঁর চুল ধরে টানও দেয়। তিনি বলেন, ‘‘এর মধ্যেউ এক জনের হাত টেনে ধরি। টানাটানির সময়ে বন্দুকটি সেখানে পড়ে যায়।’’ তাঁরা জানান, এর পরেই অফিস ছেড়ে চলে যায় ওই যুবকেরা। চন্দনবাবু পিছনে ছুটে যান। তিনি জানান, একটু দূরেই দু’টি মোটরবাইকে করে আরও দু’জন দাঁড়িয়ে ছিল। তাতে চেপে বেপাত্তা হয়ে যায় ওই যুবকেরা।

ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে চন্দনবাবু ও মধুদেবী পুলিশে খবর দেন। পুলিশ যখন আসে, অফিসের টেবিলে তখনও পড়েছিল কালো রঙের পিস্তলটি। চন্দনবাবুরা পুলিশকে সেটি দেখান। পরীক্ষা করেই পুলিশকর্মীরা বলেন, ‘‘এটি তো খেলনা পিস্তল।’’ এ কথা শুনে মাথায় হাত চন্দনবাবু ও মধুদেবীর। ঘটনার পরেই ভিড় জমিয়েছিলেন আশপাশের বাসিন্দারা। খেলনা পিস্তল মিলেছে শোনার পরে হাসাহাসি শুরু হয়। চন্দনবাবুরাও বলেন, ‘‘এ ভাবে বোকা বানিয়ে কেউ ছিনতাই করতে পারে, ভাবতে পারছি না।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুরি করাই ছিল দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন