গাঁজা পাচার বাড়ছে জেলায় বলছে পরিসংখ্যান

পুলিশের তৎপরতা সত্ত্বেও গাঁজা পাচার ক্রমশ বাড়ছে জেলায়। পুলিশ সরাসরি স্বীকার না করলেও থানায় দায়ের হওয়া মামলা, আটক করা গাঁজার হিসেব অন্তত সে কথায় বলছে। ২০১৩ সালে যেখানে ১৬টি মামলা দায়ের হয়েছিল, এ বছরের এপ্রিলের মধ্যেই সেখানে গ্রামীণ এলাকার ২০টি থানা এলাকায় ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩১৫ কিলোগ্রাম গাঁজা। গ্রেফতার করা হয়েছে ২৯ জনকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০১:১৫
Share:

পুলিশের তৎপরতা সত্ত্বেও গাঁজা পাচার ক্রমশ বাড়ছে জেলায়। পুলিশ সরাসরি স্বীকার না করলেও থানায় দায়ের হওয়া মামলা, আটক করা গাঁজার হিসেব অন্তত সে কথায় বলছে।

Advertisement

২০১৩ সালে যেখানে ১৬টি মামলা দায়ের হয়েছিল, এ বছরের এপ্রিলের মধ্যেই সেখানে গ্রামীণ এলাকার ২০টি থানা এলাকায় ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩১৫ কিলোগ্রাম গাঁজা। গ্রেফতার করা হয়েছে ২৯ জনকে। আগের বছর যেখানে ধরা হয়েছিল ১৮জনকে, আটক হওয়া গাঁজার পরিমাণও ছিল ২৮৪.৭ কিলোগ্রাম।

তবে জেলার বুকে বর্তমানে গাঁজা পাচার ক্রমে বাড়ছে তা মানতে চাননি জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা। তিনি বলেন, “বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকায় যে গাঁজা পাচার হয়ে আসছে, তা মূলত আসে দেশের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলি থেকে। সাধারণত দেখা যায় এনএল লেখা যে ট্রাকগুলি এই জেলায় যাতায়াত করে তাদের চালকেরাই ওই গাঁজা নিয়ে আসছে। তবে আগের তুলনায় গাঁজা পাচার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।” তাঁর আরও দাবি, “একটা সময়ে পাশের জেলা নবদ্বীপ থেকে বিপুল পরিমান গাঁজা আমাদের জেলায় ঢুকতো। সেটাও এখন প্রায় বন্ধের মুখে।”

Advertisement

২০০১ সালে বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর মাঠ থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। গাঁজা পাচার চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশী যোগও আবিষ্কৃত হয়েছিল সে বার। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন এক বাংলাদেশী অভিনেত্রীর দিদি, তাঁর স্বামী-সহ কয়েকজন। ওই ঘটনা কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। তদন্তের পরে পুলিশের সন্দেহ ছিল, বেশ কয়েকটি থানা ও ফাঁড়ির যোগসাজসে ওই পাচার চলত। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাঁজা পাচারে মদত রয়েছে অভিযোগে একটা সময় বর্ধমান-আরামবাগ রোডের উপর অবস্থিত সেহারাবাজার ফাঁড়িতে তালা ঝুলিয়ে সমস্ত কর্মীকে অন্যত্র বদলিও করা হয়েছিল। তারপরেও লক্ষ্মীপুর মাঠের দিকে একটা সময় নজরদারি চালাত পুলিশ। এসপির দাবি, “ওই এলাকা কিন্তু এখন বদলে যাচ্ছে। এক সময় পুলিশ ওই এলাকাগুলিতে ঢুকতে পারত না। এখন পুলিশের নজরদারিতে ওই এলাকায় গাঁজা, মদের ঠেক ইত্যাদি যে চালানো সম্ভব নয়, তা বুঝে গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে তাঁরাই এখন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এলাকায় অসামাজিক কাজের খবর দিয়ে দিচ্ছেন।” বাংলাদেশী গাঁজা পাচার চক্র ওখানে আর সক্রিয় নয় বলেও তাঁর দাবি।

গাঁজা পাচারকারীদের সাজা দিতে বর্ধমানে দীর্ঘদিন আগেই গঠিত হয়েছে বিশেষ আদালত। এই আদালতের আইনজীবীদের নিয়ে পুলিশ সম্প্রতি একটি বৈঠকও করেছে। তাতে পুলিশের দায়ের করা মামলায় যাতে অভিযুক্তেরা সহজে জামিন না পায় তার জন্য ওই আইনজীবীদের গাঁজা তথা মাদক পাচার সংক্রান্ত ধারাগুলি নানা দিক থেকে ব্যখ্যা করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তবে গাঁজা পাচার রুখতে সতর্কতা আরও বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। এসপি বলেন, “বর্ধমানের নানা রাস্তা আটকে আমরা যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছি। ফলে গাঁজা নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার আগে পাচারকারীরা দু’বার ভাবছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement