ভিড়িঙ্গি রাজমহল মোড়ে ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।
প্রায় দেড় দশক আগে পুরনো গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড সম্প্রসারণ করে তৈরি হয় চার লেনের জাতীয় সড়ক। কিন্তু আসানসোলের থেকে দুর্গাপুর, বর্ধমান হয়ে সরাসরি কলকাতা যাওয়ার এই রাস্তার বেশকিছু অংশ সংস্কারের অভাবে বেহাল বলে অভিযোগ শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দাদের।
জাতীয় সড়কের ধারে ওল্ড কোর্ট, ভিড়িঙ্গি এলাকায় রয়েছে গাড়ির শো-রুম, বাজার, হোটেল। রয়েছে সিআইএসেএফর ব্যারাকও। দুর্গাপুর সহ অন্ডাল, উখড়া এলাকার মানুষ আসেন বেনাচিতি বাজারে। ভিড়িঙ্গি মোড় দিয়েই বাজারে আসতে হয়। অথচ গেট এলাকা এবং ভিড়িঙ্গি মোড়ের আগে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গিয়েছে। এর জেরে পুজোর মরসুমে ব্যবসা মার খাচ্ছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। বেঙ্গল সুবার্বান চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল ঘোষ বলেন, “ব্যবসার জন্য জাতীয় সড়কের আমূল সংস্কার প্রয়োজন।” মেন গেট এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ সেলিম, শতরূপ মজুমদারেরা জানান, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাস্তা পারাপার করতেও ভয় লাগে।
দুর্ঘটনাপ্রবণ ডিভিসি মোড় এলাকাতেও বেশ কয়েকটি জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়েছে। মুচিপাড়াতেও রাস্তার একই হাল। অথচ এখান দিয়েই কলকাতাগামী গাড়িগুলি চলাচল করে। তা ছাড়া স্টেশন ও বামুনাড়ার দিক থেকে আসা গাড়িগুলিও মুচিপাড়া দিয়েই জাতীয় সড়ক ধরে। বাস যাত্রী পিঙ্কি সরকার বলেন, “ঝাঁকুনিতে কোমরে ব্যথা ধরে যায়।” বাস চালক মানিক সরকার বলেন, “রাস্তা বেহাল হওয়ায় বাসের যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হচ্ছে।” এই রাস্তার উপর একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি দফতর রয়েছে। এই রাস্তা ধরেই কর্মসূত্রে প্রতিদিন কাঁকসা থেকে আসানসোল যেতে হয় অর্ঘ্য পোদ্দারকে। তিনি বলেন, “রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফুট দেড়েকের গর্ত। মোটরবাইক চালানোর সময়ে গর্তে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।” গলসির বাসিন্দা পারভেজ আলমের অভিজ্ঞতাও একই রকম।
বছরে বার দু’য়েক তাপ্পি দিয়ে রাস্তা সংস্কারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আমূল সংস্কার না হওয়ার ফলে বর্ষা এলেই পিচ উঠে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঝাড়খন্ডের ধানবাদ জেলার বারোয়াড্ডা থেকে পানাগড় পর্যন্ত ১১৪ কিমি রাস্তা ৬ লেন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাই বর্তমানে জাতীয় সড়কের কোনও অংশের আমূল সংস্কার করার পরিকল্পনা নেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি, মেন গেট এলাকায় তাপ্পি দেওয়ার কাজ চলছে। রাস্তার বাকি অংশও দ্রুত সংস্কার করা হবে।