সেজেছে গণেশ মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।
গণেশ পুজো এতদিন অবাঙালিদের মধ্যেই বেশি প্রচলিত ছিল। মহারাষ্ট্রে সিদ্ধি বিনায়ক উৎসব চলে টানা দশদিন। ততদিন না চললেও বর্ধমানেও দিন চারেক ধরে ‘গণপতি বাপ্পা’র আরাধনার চল শুরু হয়েছে। সঙ্গে থাকছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
গত বছর শহরের ৬-৭টি বাজারে জনা কয়েক যুবক গণেশ পুজো শুরু করেন। এই বছর সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। মৃৎশিল্পীরা দুর্গা পুজোর আগে সাধারণত ব্যস্ত থাকনে বিশ্বকর্মার মূর্তি তৈরিতে। কিন্তু শহর ঘুরে দেখা গেল এখন তাঁরা ব্যস্ত গণেশ তৈরিতে। গণেশ পুজোর পরই বিশ্বকর্মার মূর্তিতে হাত দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানালেন তাঁরা। শহরের ভাতছালার এক মৃৎশিল্পী অরুণ পালের বলেন, “আগে বিশ্বকর্মা দিয়েই শুরু হত দুর্গা পুজোর কাউন্টডাউন। এই প্রথম তা শুরু হচ্ছে গণেশ পুজো থেকেই।” বিশ্বকর্মার আগে শুধু মনসার মূর্তি তৈরি করা হত। কিন্তু এই বছর থেকে শহরে গণেশ পুজোর চল বাড়ার ফলে আর্থিক দিক থেকেও কিছুটা সুরাহা হয়েছে বলে মনে করেন অরুণবাবু।
কয়েক বছর আগে বারোয়ারি গণেশ পুজো শুরু করার উদ্যোগে সামিল হয়েছিলেন বীরহাটা কালীবাড়ির ব্যবসায়ী সুকান্ত চক্রবর্তী। শহরের গণেশ পুজো সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, বছর তিনেক আগে আমরা কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে পুজোর আয়োজন করি। গণেশ যেহেতু ব্যবসায়ীদের দেবতা, তাই ভাবলাম এই পুজোকেও যদি সর্বজনীন করা যায়। এখন পুজো কমিটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮০। দিন তিনেক পুজো চলবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করা হবে। বর্ধমানের বিসিরোডের এক পুজো কমিটির কর্তা দেবব্রত রায়ের বলেন, “আমাদের পুজোর বয়স দু’বছর। প্রায় ১০০ সদস্য রয়েছেন পুজোয়।” পুজোর শেষ দিনে এ বার মণ্ডপে বাউল গানের আখড়া বসবে বলে জানানো হয় পুজো কমিটির তরফ থেকে। এ ছাড়া শহরের দত্ত সেন্টার, বোরহাট, তেঁতুলতলা বাজারেও সর্বজনীন গণেশ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শহর লাগোয়া পুলিশ লাইনের দুর্গা মার্কেটে গণেশ পুজোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। পুজো কমিটির সভাপতি তমাল মির বহরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল বাসিন্দাদের দুর্গা পুজোর আগেই পুজোর স্বাদ দিতে তাঁদের এই আয়োজন। পুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি চলবে সমাজ সেবার কাজও।
তবে শুধু শহরেই নয় বর্ধমানের গ্রামেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে গণেশ পুজোর চল। পালশিট গ্রামে পুজোর উদ্যোগ নিয়েছে গণপতি সোসাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। বুধবার ২৭ অগস্ট থেকেই পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজো চলবে ৩১ তারিখ পর্যন্ত। সঙ্গে থাকছে বস্ত্রদান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির, কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনার মত বিভিন্ন অনুষ্ঠান।