পুরভোটের এলাকা পুনর্বিন্যাস ও আসন সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হতে চলেছে আজ, মঙ্গলবার। এর আগে খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে নানা দলের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। তালিকা বদলের দাবিও জানিয়েছিল অনেক দল। গোছা গোছা অভিযোগও জমা পড়েছিল কালনা মহকুমা থেকে। সমস্ত অভিযোগের শুনানির পরে আজ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে চলেছে জেলা প্রশাসন।
কয়েক মাস আগে থেকেই পুর এলাকাগুলির পুনর্বিন্যাসের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে প্রশাসন। ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম তালিকা প্রকাশ পায়। জেলাশাসকের দফকতর ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকের দফতরেও ওই তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। কালনার ক্ষেত্রে দেখা যায়, গত বারের ৬ কাউন্সিলার এ বার নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না। সিপিএমের তরফে দাবি করা হয়, যথাযথ নিয়ম মেনে তালিকা তৈরি করা হয় নি। ১০ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান তারা। অভিযোগপত্রের সঙ্গে পুরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা, জনসংখ্যা, তফসিলি জাতি, উপজাতির সংখ্যা-সহ বেশ কিছু তথ্যও দেয় তারা। তালিকা নিয়ে আপত্তি তোলে শাসকদলও। তাদের ক্ষোভ অবশ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। দলের একটা অংশ ফের তালিকা প্রকাশের দাবি করে। আর এক অংশ তালিকা না বদলানোর কৌশল নেয়। সবমিলিয়ে নানা মহল থেকে গোছা গোছা অভিযোগ জমা পরে প্রশাসনের কাছে। কালনা মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার অভিযোগ জমা পড়ার শেষ দিন ছিল। এ দিনও কালনা মহকুমাশাসকের দফতরে পাঁচটি অভিযোগ জমা পরে। তাতে এক কাউন্সিলর-সহ ৩৫ জনের স্বাক্ষর ছিল বলেও জানা গিয়েছে। মহকুমাশাসকের দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সোমবার জেলাশাসকের দফতরে বিষয়টি নিয়ে শুনানি হবে। এই শুনানির পরেই মঙ্গলবার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কথা। শুধু কালনা পুরসভা নয়, অন্য তিন পুর এলাকা থেকেও কিছু কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল। ফলে সেগুলিতেও এ দিন নতুন করে তালিকা প্রকাশ করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “এটি অত্যন্ত গোপনীয় বিষয়। সোমবার অনেকেরই অভিযোগ শোনা হয়েছে। নিয়ম মেনেই তালিকা প্রকাশিত হবে।”
তালিকা প্রকাশের আগে কালনার রাজনৈতিক মহলে তীব্র কৌতুহল দেখা গিয়েছে। কোন ওয়ার্ড মহিলা হবে, কোন ওয়ার্ড সংরক্ষিত হবে, কোন ওয়ার্ডে ওজনদার প্রার্থীকে দাঁড় করানো যাবে না তা নিয়ে ছক কষতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। এ দিন জেলাশাসকের কার্যালয়ে শুনানি পর্ব শেষ করে কালনার ১৭ ওয়ার্ড নম্বরের কাউন্সিলার তথা তৃণমূল নেতা দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “ভারত সরকারের একটি ওয়েবসাইটে যে কোনও কারনেই হোক কালনা শহরে জনসংখ্যা কম দেখানো হয়েছে। ওয়েবসাইটে কালনার জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে ৫৬ হাজার ৭২২ জন। অথচ শেষ জনগণনা অনুযায়ী কালনার জনসংখ্যা ৫৭ হাজার ৫৬ জন। এর স্বপক্ষে কিছু নথি তুলে ধরে ফের ওয়ার্ড বিন্যাসের তালিকা তৈরির দাবি করা হয়েছে।” সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, দল কালনার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য তুলে ধরে পুনরায় স্বচ্ছ তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। তবে বিজেপি আবার তালিকা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। দলের বর্ধমান পূর্ব এলাকার সভাপতি রাজীব ভৌমিকের কথায়, “আমরা তালিকা নিয়ে চিন্তিত নই। যে তালিকায় প্রকাশিত হোক না কেন দল শক্তিশালী প্রার্থী দিতে তৈরি রয়েছে।”