ক্ষুদিরাম সরণির বাঁক নিয়ে অভিযোগ গাড়ির চালক থেকে পথচারীদের। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তা চওড়া করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, দাবিপূরণে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। এর জেরে প্রায়শই দু’নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ডিভিসি মোড় হয়ে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার যাওয়ার রাস্তা, ক্ষুদিরাম সরণির একাংশে প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
জাতীয় সড়ক থেকে সিটি সেন্টার যেতে গেল প্রধান ভরসা এই রাস্তাটি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, আসানসোলগামী সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বাস এই রাস্তাটি ধরেই সিটি সেন্টারে আসে। উল্টো দিকে, বর্ধমানগামী বিভিন্ন বাস ক্ষুদিরাম সরণি দিয়ে জাতীয় সড়কে ওঠে। শহরের ভিতরে চলা বিভিন্ন মিনিবাসগুলিও দুর্গাপুর স্টেশন এই রাস্তা ধরেই সিটি সেন্টারে পৌঁছয়। এ ছাড়া অটো, ব্যক্তিগত গাড়ি তো রয়েছেই। সিটি সেন্টার ও লাগোয়া এলাকায় রয়েছে আদালত, মহকুমাশাসকের দফতর-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তা ছাড়া, ওই রাস্তার বাঁকের উপরেই রয়েছে একটি চার্চ। বড়দিনের মরসুমে সেখানেও ভিড় থাকে যথেষ্ট। ভিড়ের চাপে গত ২৫ ডিসেম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয় রাস্তার ওই অংশটি।
তবে গোটা রাস্তা নয়, সমস্যা রয়েছে সিটি সেন্টার ঢোকার মুখে একটি ছোট সেতুকে ঘিরে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুর উপর রাস্তাটি বেশি চওড়া নয়। ব্রিজের দু’দিকে বড় বাঁক থাকাতেও গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখতে সমস্যা হয় বলে জানান বেশ কয়েকজন মোটরবাইক আরোহী। সেপ্টেম্বর মাসের অতিবৃষ্টিতে রাস্তার একাংশে ধস নেমে বড় গর্ত তৈরি হয়। দিন সাতেকের জন্য বন্ধ রাখা হয় রাস্তাটি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই রাস্তায় যানবাহনের ভালই চাপ রয়েছে। কিন্তু ধসের পর মেরামতি করা হলেও রাস্তাটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়নি। ফলে রাস্তার ওই জায়গাতেও যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান গাড়ির চালকেরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাঁকেই বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ১৫ ডিসেম্বর সিটি সেন্টার থেকে মোটরবাইকে চ়ড়ে আসছিলেন নব ওয়ারিয়ার বাসিন্দা বিশু মণ্ডল। বাঁকের উপক চার্চ সংলগ্ন এলাকায় মোটরবাইকটিকে ধাক্কা মারে একটি মিনিবাস। মৃত্যু হয় বিশুবাবুর। এ ছাড়াও মাস খানেক আগে, সিটি সেন্টার থেকে বেরানোর সময় এক মোটরবাইক আরোহী পথদুর্ঘটনায় জখম হন। গত বছর অক্টোবরে বাঁকের কাছে রাস্তা বুঝতে না পেরে ব্রিজের নীচে পড়ে যায় একটি গাড়ি। জখম হন যাত্রীরা। স্থানীয় বসিন্দা পরিমল অগস্তি জানান, রাস্তায় গাড়ির ভালই চাপ রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাস্তার ওই অংশটি সম্প্রসারণের দাবি জানিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।’’
এডিডিএ-র চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদিও দাবি, ‘‘ওই রাস্তায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জায়গায় সংস্কারের কাজ চলছে।’’