ছাত্রের মৃত্যু, তদন্তে নিষ্ক্রিয়তার নালিশ

ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিল বছর আঠেরোর ছেলেটি। দিন দশেক হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে মৃত্যু হল রূপনারায়ণপুরের ছেলেটির। তার পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে ঘটনার তদন্তে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, আবাসনের ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রকে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি তাঁদের। পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫০
Share:

ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিল বছর আঠেরোর ছেলেটি। দিন দশেক হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে মৃত্যু হল রূপনারায়ণপুরের ছেলেটির। তার পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে ঘটনার তদন্তে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, আবাসনের ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রকে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি তাঁদের। পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ অগস্ট রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেব্লস বি-টু আবাসন এলাকা থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় বীরেন্দ্র সাহা (১৮) নামে ওই ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। তাঁকে প্রথমে স্থানীয় পিঠাইকেয়ারি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্ত অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে বলেন। পুলিশ এর পরে তাঁকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। বীরেন্দ্রর বাড়ির লোকেদেরও খবর পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পরে ওই ছাত্র কিছুটা সুস্থ হয়েছিল। কিন্তু, শুক্রবার মাঝরাত থেকে ফের অবস্থার অবনতি হয়। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় বীরেন্দ্রর।

পুলিশের দাবি, বিভিন্ন সূত্রে খবর নিয়ে তারা জেনেছে, গত ১১ অগস্ট ওই ছাত্র ও তাঁর এক বান্ধবীকে কেব্লসের একটি বি-টু আবাসনের তিনতলার ছাদে দেখা গিয়েছিল। এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা তাঁদের দেখতে পেয়ে নীচে নামিয়ে আনেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ছাত্রটিকে গুরুতর জখম অবস্থায় আবাসন লাগোয়া এলাকায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন বাসিন্দারা। এর মাঝে ঠিক কী ঘটেছিল, তা পুলিশের তদন্ত করে দেখা উচিত বলে দাবি করেছেন বীরেন্দ্রর পরিজনেরা।

Advertisement

শনিবার বিকেলে বীরেন্দ্রর দেহ দুর্গাপুর থেকে নিয়ে আসার পরে আত্মীয়-পরিজনেরা রূপনারায়ণপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। মৃতের বাবা শুভেন্দু সাহা চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানায় আরপিএফ বাহিনীতে কর্মরত। তাঁর বেশ কিছু সহকর্মীও বিক্ষোভে যোগ দেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ওই ছাত্রকে আবাসনের তিনতলার ছাদ থেকে ঠেলে নীচে ফেলে দেওয়া হয়েছে। যারা তাকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে, তাদের নামও বীরেন্দ্র কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জানিয়েছিল বলে আত্মীয়-পরিজনদের দাবি। তাঁদের আরও অভিযোগ, পুলিশ এই তথ্য জেনেও অপরাধীদের গ্রেফতার করছে না। যত ক্ষণ না গ্রেফতার করা হবে, ততক্ষণ বিক্ষোভ-অবস্থান চলবে বলে জানিয়ে দেন তাঁরা।

প্রায় চার ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (পশ্চিম) অভিষেক রায়। তিনি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ থামান। অভিষেকবাবু বলেন, “আমিও জেনেছি, ওই ছাত্র চিকিৎসকদের কাছে কয়েক জনের নাম জানিয়েছেন। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি। তদন্তের স্বার্থে আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে কাউকে গ্রেফতার করা হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন