জামিন পেয়ে ফের কটূক্তি, আত্মঘাতী ছাত্রী

মাস দু’য়েক আগে এলাকারই এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল পড়শি কিশোর। এ বার ওই নাবালিকাকেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠল সদ্য জামিন পাওয়া সেই কিশোরের বিরুদ্ধে। বর্ধমানের রায়নার নাড়ুদগ্রামের বাসিন্দা, অভিযুক্ত ওই কিশোর সপ্তাহ তিনেক হল জামিনে ছাড়া পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩২
Share:

মাস দু’য়েক আগে এলাকারই এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল পড়শি কিশোর। এ বার ওই নাবালিকাকেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠল সদ্য জামিন পাওয়া সেই কিশোরের বিরুদ্ধে।

Advertisement

বর্ধমানের রায়নার নাড়ুদগ্রামের বাসিন্দা, অভিযুক্ত ওই কিশোর সপ্তাহ তিনেক হল জামিনে ছাড়া পেয়েছে। অভিযোগ, তার পর থেকেই অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে সে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। দলবল নিয়ে মেয়েটির বাড়ির লোককে প্রাণে মারার হুমকিও দেয় একাধিক বার। শনিবার সন্ধ্যায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই কিশোরী। সুইসাইড নোটে বছর চোদ্দোর মেয়েটি সরাসরি ওই কিশোর ও তার পরিবারের লোকেদের নামে তাকে উত্ত্যক্ত করা, হুমকি দেওয়ার কথা লিখে গিয়েছে। মৃতার বাবা ওই কিশোর-সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতেই অভিযুক্ত কিশোরের মা-সহ চার মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে বাকি ১০ জন পলাতক। বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। বাকি ১০ অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।”

মেয়েটির বাবার অভিযোগ, ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি ও তাঁর স্ত্রী চাষজমিতে কাজ করতে যাওয়ায় বাড়িতে একাই ছিল মেয়ে। তখনই পড়শি ওই কিশোর বাড়িতে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। অসুস্থ ছাত্রীটিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়। অভিযোগ পেয়ে ওই নাবালককে গ্রেফতার করে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করে পুলিশ। তাকে হোমে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু, ২১ দিন পরে জামিনে ছাড়া পেতেই ফের সে মেয়েটিকে বিরক্ত করা শুরু করে। ওই কিশোরীর বাবার দাবি, “আমার মেয়েকে রাস্তায় দেখলেই ও কটূক্তি করত। মাঝে বাড়িতে ঢুকে দলবল নিয়ে ভাঙচুরের চেষ্টাও করে। পুলিশকে সব জানিয়েছিলাম। এ সব সহ্য করতে না পেরেই মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।”

Advertisement

বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, অভিযুক্ত ছেলেটির পরিবারের লোক ওই কিশোরী ও তার বাড়ির লোককে গালিগালাজ করছে, এমন অভিযোগ পেয়ে অশান্তির চেষ্টা, মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া ইত্যাদি ধারায় মামলা করেছিল পুলিশ। তার পরেও ছেলেটি বা তার বাড়ির লোকজনের অত্যাচার কমেনি বলেই দাবি মৃত কিশোরীর পরিবারের। ওই কিশোরীর জামাইবাবু বলেন, “প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময়ে ওকে উত্ত্যক্ত করত ছেলেটা। সন্ধ্যায় নিয়মিত পড়ার ঘরে ইট মারত। কিন্তু অভিযুক্তের পরিবারের লোকেরা সংখ্যায় বেশি বলে আমরা কিছু বলতে পারতাম না।” স্থানীয় এক বাসিন্দার বক্তব্য, “ছেলেটির পরিবারের লোকেদের এ ব্যাপারে কিছু বলতে গেলেই ওরা আমাদের প্রাণে মারার হুমকি দিত। তাই ভয়ে কিছু বলতে পারতাম না। ছেলে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরে ওদের প্রতাপ যেন আরও বেড়ে গিয়েছিল!”

অভিযুক্তের বাড়ির কাউকে অবশ্য কথা বলার জন্য পাওয়া যায়নি। তারা অধিকাংশই এলাকা ছাড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন