ভোট নিয়ে বৈঠক।—নিজস্ব চিত্র।
জেলায় ভোটদানে যোগ্য এমন সমস্ত মানুষরে নামই ভোটার তালিকায় তোলা হয়ে গিয়েছে এবং তাঁদের প্রত্যেককে পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করল বর্ধমান জেলা প্রশাসন।
বুধবারই ঘোষণা হয়েছে এ বারের লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট। এই জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্র এবং বোলপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম ও বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের অধীন খণ্ডঘোষ মিলিয়ে এ বার ভোটার সংখ্যা ৫৪,১৯,৫৩৩, বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। তিনি বলেছেন, “আমাদের হিসেব অনুসারে, প্রত্যেক ভোটারের নাম সচিত্র ভোটার তালিকায় রয়েছে। তবে এমন হতে পারে, কিছু লোক এক সময়ে জেলা ছেড়ে অন্যত্র গিয়েছিলেন। তাঁরা এ বার ভোটের আগে ফিরে এসেছেন। তাঁদের নাম হয়তো ভোটার তালিকায় ওঠেনি। তাই আগামি ৯ মার্চ জেলার মোট ৬৭৮৪টি বুথে ভোটকর্মীদের মোতায়েন করছি। ভোটারদের দায়িত্ব হল, সংশ্লিষ্ট বুথে গিয়ে ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে কি না, তা দেখে নেওয়া।” যদি কোনও কারণে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট ভোটারের নাম তালিকায় নেই, সে দিন বুথেই ফর্ম মিলবে। ভোটারেরা তা পূরণ করে নাম তুলতে পারবেন তালিকায়, জানান জেলাশাসক।
জেলাশাসক জানান, এ বারই প্রথম বর্ধমানে এমন ৫০টি বুথ থাকছে যেখানে ভোটকর্মীরা হবেন সকলেই মহিলা। এক জন পোলিং অফিসার ও তিন জন ভোটকর্মীর সকলে মহিলা, এমন বুথগুলি সাধারণত থাকবে জেলার শহর অথবা সংখালঘু অধ্যুষিত এলাকায়। এ ছাড়াও এমন বুথ রাখা হবে সেই সব এলাকায় যেখানে পুরুষদের তুলনায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা বেশি। এ জন্য প্রায় আড়াইশো মহিলা ভোটকর্মীকে প্রশিক্ষএ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বর্ধমান পূর্ব ও বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে ভোট হবে ৩০ এপ্রিল। বোলপুর কেন্দ্রের অধীন কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রামেও সে দিন ভোট হবে। আসানসোল কেন্দ্রের ভোট ৭ মে। বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের মধ্যে পড়া খণ্ডঘোষে ভোট সে দিন। গলসির ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তৃণমূলের হয়ে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন। ওই বিধানসভা আসনে উপ-নির্বাচন হবে ৩০ এপ্রিল। এই বিধানসভা এলাকার বুথে এক পোলিং অফিসারের সঙ্গে থাকবেন পাঁচ জন করে ভোটকর্মী। সব মিলিয়ে ভোট গ্রহণের কাজে ৩৬০৩৪ জন কর্মীর দরকার হবে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ৩৮ হাজার কর্মীকে ভোটের কাজের জন্য চিহ্নিত করে তাঁদের দফায়-দফায় প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে বলে জানান জেলাশাসক।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, এ বার প্রতিটি বুথে থাকছে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম। মোতায়েন থাকবে অ্যাম্বুল্যান্স ও চিকিৎসক। অসুস্থ, অক্ষম, প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য আলাদা লাইন দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। জেলাশাসক বলেন, “ভোটের কাজে ব্যবহারের জন্য আমরা মোট ৬০-৬৫ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী চেয়েছি। তবে কতটা মিলবে তা জানার পরে ঠিক হবে, বাহিনীকে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে।” প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান পূর্ব এবং বর্ধমান-দুগাপুর কেন্দ্রের জন্য মনোনয়নের কাজকর্ম হবে জেলা সদর বর্ধমানে। আসানসোলের ক্ষেত্রে তা হবে আসানসোল অতিরিক্ত জেলাশাসকের দফতরে।