জমে উন্নত কয়লা, সীমা বাড়ানোর দাবি খনিতে

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২০:২১
Share:

কোলিয়ারির ভূগর্ভের সীমারেখা আরও পাঁচশো মিটার বাড়ানো না হলে বিপুল পরিমাণ উন্নত কয়লা থেকে বঞ্চিত হবে সংস্থা। ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার নরসমুদায় এই সীমারেখা বাড়ালে কোলিয়ারির মেয়াদও আরও দশ বছর বাড়বেএই দাবি জানিয়ে সংস্থার সিএমডি-কে চিঠি দিল কোলিয়ারি মজদুর ইউনিয়ন (সিএমইউ)। তাদের আরও দাবি, ভূপৃষ্ঠের উপরের অংশে থাকা জনপদ বা ইস্কো কারখানার কোনও ক্ষতি না করে এবং কয়লার খুঁটি না কেটে এই মেয়াদ বৃদ্ধি সম্ভব। তা না হলে চার বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে এই খনি। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা চলছে।

Advertisement

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, নরসমুদা খনির কয়লা জি-ফোর গুণমানের। বিদ্যুৎকেন্দ্র ও নানা শিল্প সংস্থায় এই ধরনের কয়লার চাহিদা ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে। ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে এই কোলিয়ারি থেকে ৭২ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হয়েছিল। কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে এই খনির গর্ভে কয়লা কাটার সীমারেখা পাঁচশো মিটার বাড়ানো হয়েছিল। কয়লার খুঁটি না কেটেও তখন থেকে দশ বছর চলার কথা এই কোলিয়ারির। সেই অনুযায়ী, মেয়াদ বাকি আর চার বছর। বর্ধিত এই এলাকায় খনির উপেরর জমিতে রয়েছে ইস্কোর উপনগরী, ছোটদিঘারি গ্রাম এবং ইস্কো কারখানার কিছু অংশ। এই অংশে এখন জমির উপরিভাগ থেকে কয়লা উত্তোলনস্থল ১৫০ মিটার গভীরে। ছ’বছর আগে ওই সীমা বর্ধিতকরণের পরে জমির উপরিভাগে কোনও সমস্যা হয়নি বলে কোলিয়ারি সূত্রে খবর। নতুন করে সীমারেখা বাড়নো হলে তার উপরিভাগে থাকবে ইস্কো কারখানার কিছু অংশ।

আইএনটিইউসি অনুমোদিত সংগঠন সিএমইউ-এর কার্যকরি সভাপতি পজয় মাসির দাবি, ভূগর্ভে প্রতি দশ ফুট এলাকা জুড়ে কয়লা কাটলে এক ফুট গভীরতা বাড়ে। সেই হিসেবে নতুন করে পাঁচশো মিটার এলাকা বর্ধিতকরণে আরও ৫০ ফুট গভীরতা বাড়বে। তাতে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। কয়লা উত্তোলনস্থলের দূরত্ব বা গভীরতা যত বাড়বে, উপরিভাগ তত স্থিতিশীল হবে। তিনি জানান, ইসিএল কর্তৃপক্ষকে তাঁরা জানিয়েছেন, এই কোলিয়ারির সীমারেখা না বাড়ালে কর্মরত ৮১৯ জনের চাকরি যাবে না ঠিকই, তবে মজুত কয়লার ভাণ্ডার থেকে বঞ্চিত হবে সংস্থা। ওই কোলিয়ারির ওভারম্যান তথা সিএমইউ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় মাজি চার ছর পরে খনি বন্ধ করে দিলে ভবিষ্যতে এই কয়লাক্ষেত্র চোরদের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও রয়েছে। এই কয়লা চোরেদের হাতে যাওয়ার থেকে সংস্থার তুলে নেওয়াই শ্রেয় বলে তাঁরা মনে করছেন, জানান তিনি।

Advertisement

সিএমইউ-এর নেতাদের দাবি, এই কাজ করার জন্য ইস্কো, ডিজিএমএস এবং ইসিএল কর্তৃপক্ষের বৈঠকে বসে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তার পরে রাজ্য সরকারের কাছে উপরিভাগের লিজ হোল্ডের অনুমতি নিলেই নতুন করে সীমা বাড়ানোর কাজ করা যাবে।

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, এই বিষয়টি নিয়ে সদর দফচরের পরিকল্পনা বিভাগ সমীক্ষা করছে। তার রিপোর্ট পেলে সংশ্লিষ্ট সব ক’টি দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে। তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। ইস্কো কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি বিবেচনাধীন। ইসিএলের কাছ থেকে কোনও প্রস্তাব পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন