ঝাঁ চকচকে টাউনশিপেও জলের জন্য হাপিত্যেশ

জীর্ণ এমএএমসি বা এইচএফসিএল কলোনি নয়। মাত্র এক দশকের পুরনো আধুনিক ঝকঝকে সেপকো টাউনশিপ। বসবাস প্রায় দেড় হাজার পরিবারের। অথচ পানীয় জলের আকালে জেরবার বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভ, গ্রীষ্মকালের তুলনায় সমস্যা কিছুটা কমেছে ঠিকই। কিন্তু জলের অভাব পুরোপুরি মিটছে না। পুরসভায় বার বার সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:২১
Share:

জীর্ণ এমএএমসি বা এইচএফসিএল কলোনি নয়। মাত্র এক দশকের পুরনো আধুনিক ঝকঝকে সেপকো টাউনশিপ। বসবাস প্রায় দেড় হাজার পরিবারের। অথচ পানীয় জলের আকালে জেরবার বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভ, গ্রীষ্মকালের তুলনায় সমস্যা কিছুটা কমেছে ঠিকই। কিন্তু জলের অভাব পুরোপুরি মিটছে না। পুরসভায় বার বার সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।

Advertisement

এক দিকে ডিএসপি টাউনশিপের রাজেন্দ্র প্রসাদ রোড, আর এক দিকে ভগৎ সিং মোড়। মাঝের এবড়ো-খেবড়ো টিলায় শুধু আগাছার সারি। শহরের ক্রমবর্ধমান জনবসতির চাহিদা মেটাতে সেখানেই গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয় এক টাউনশিপের। অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাত কারখানার কর্মীরা সেখানে বাড়ি তৈরি করবেন। তাঁদের সমবায় ‘স্টিল এমপ্লয়িজ পিপলস কো অপারেটিভ’ (সেপকো)-এর নামে নামকরণ করা হয় টাউনশিপের। ২০০৪ সালে টাউনশিপের উদ্বোধন করেন রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী প্রয়াত মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই তৈরি হতে থাকে একের পর এক বাড়ি। বছর দু’য়েকের মধ্যেই টাউনশিপের ভিতর দিয়ে বাস চলাচলও শুরু হয়। পুরসভার তরফে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হয়।

সেপকো টাউনশিপের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই চাহিদা মতো পানীয় জল মিলছে না। সকাল-বিকেল দু’বেলা জল দেওয়া হয়। কিন্তু তা খুব অল্প সময়ের জন্য। ফলে বাড়ির ট্যাঙ্ক ভরে না। তাঁদের আরও অভিযোগ, মাঝে মাঝে দিনে একবারের বেশি জল আসে না। জল নিয়ে বাড়ির একাধিক শরিকের মধ্যে ঝামেলা-অশান্তিও হয়ে থাকে। বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ ব্যবস্থার উপরে নির্ভর করেই দিন কাটে এই টাউনশিপের বাসিন্দাদের। অন্য কোনও উৎস নেই। স্থানীয় বাসিন্দা পার্থসারথি রায়, সুপর্ণা পাল’রা বলেন, “আধুনিক এক টাউনশিপে বসবাস করেও দীর্ঘদিন ধরে পানীয় জলের সমস্যায় দিন কাটছে আমাদের।” তাঁরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে বার বার পুরসভার কাছে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি।

Advertisement

স্থানীয় কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু আচার্য জানিয়েছেন, টাউনশিপ গড়ার সময় যে ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইন পাতা হয়েছিল, তাতে প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে। টাউনশিপের একাদিক উঁচু। অন্যদিক তুলনায় নীচু। এর ফলে নীচু অংশের বাড়িগুলিতে জল ঠিক ভাবে পৌঁছলেও উঁচু জায়গার বাড়িতে সে ভাবে যায় না। এর ফলে সমস্যায় পড়তে হয় সেই এলাকার বাসিন্দাদের। পুরসভার বাস্তুকাররা এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে বিষয়টি দেখেছেন। সমস্যা না মেটায় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁদের। কাউন্সিলর বলেন, “পুরসভার পক্ষে পাইপ লাইন বদলানোর আর্থিক দায়ভার একা বহন করা সম্ভব নয়। তবে নির্মীয়মাণ জলপ্রকল্প চালু হয়ে গেলে সেপকো টাউনশিপে দীর্ঘক্ষণ ধরে জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তখন সমস্যার অনেকটাই মিটে যাবে বলে আশা করছি।” তিনি জানিয়েছেন, ১৫ এমজিডি জলপ্রকল্প নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ দিকে। তা চালু হলে পানীয় জলের পরিমাণ এক ধাক্কায় বেড়ে যাবে অনেকখানি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন