কোথাও মদ খেয়ে টোটো চালকদের মারধর, আবার কোথাও অতিরিক্ত যাত্রী নিতে না চাওয়ায় মার— দুই ঘটনার প্রতিবাদেই কালনা থাকায় বিক্ষোভ দেখালেন টোটো চালকেরা। তাঁদের দাবি, খেয়াঘাট, হোটেল, দোকান, এমনকী রাস্তাঘাটেও বেআইনি মদের ব্যাবসা চলছে। রাত হলেই শুরু হচ্ছে মদ্যপদের দাপাদাপি। অনেকই জোরজুলুম করে টোটোয় উঠতে চেয়ে মারধর করছেন বলেও তাঁদের দাবি।
সাধারণ ভাবে কালনা খেয়াঘাট থেকে যাত্রীদের নিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় টোটো যাতায়াত করে। মঙ্গলবার সেখানেই এক মদ্যপের হাতে মানিক সরকার নামে এক টোটো চালককে মার খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ দিন সন্ধ্যায় জনা তিনেক যাত্রীকে টোটোয় নিয়ে খেয়াঘাট থেকে শহরে আসছিলেন মানিক। গাড়ি কিছুদূর এগোতেই জনা তিনেক মদ্যপ যুবক গাড়ি আটকে গালিগালাজ শুরু করে। যাত্রীরা বিব্রত বোধ করে নেমে যেতে চাইলে মদ্যপ যুবকেরা জোর করে টোটোর চাবি কেড়ে নিতে চায় বলে অভিযোগ। আশপাশে তখন আরও কয়েকজন টোটো চালক ছিলেন। মানিকবাবুর দাবি, তাঁরা এগিয়ে এলে বাগবিতন্ডা শুরু হয়ে যায়। তবে সবাই মিলে ঝামেলা থামিয়ে শহরের দিতে টোটো নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। কিন্তু তাতেও মদ্যপদের দাপাদাপি থামেনি। মানিকবাবুর দাবি, এরপরেই মদ্যপেরা আরও দলবল নিয়ে এক নার্সিংহোমের সামনে জড়ো হয়। অভিযোগ, সেখানে সঞ্জিত পাল নামে এক টোটো চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় গাড়িটিও। পরে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ১১টি সেলাই পড়ে ওই যুবকের মাথায়।
এরপরেই উত্তেজিত টোটো চালকেরা থানায় এসে দোষিদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, খেয়াঘাট থেকে ওই পথে বহু সাধারণ মানুষ, স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা চলাচল করে। অথচ সেখানেই রমরমিয়ে বেআইনি মদের কারবার চলছে। তার জেরে মদ্যপ অবস্থায় হাতাহাতি, গোলমালও বাধছে প্রায় দিন। টোটো চালক অমর পাল, মুক্ত পাল, হরি পালেদের দাবি, দিনরাত মদের ঠেক চলে ওই এলাকায়। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে যে কোনও দিন বড় গোলমাল হতে পারে বলেও তাঁদের আশঙ্কা।
এ দিনই পূর্বস্থলী ষ্টেশন বাজারেও গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী তুলতে না চাওয়ায় এক টোটো চালককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। জাহিরুল শেখ নামে ওই চালককে বাঁচাতে গিয়ে মার খান আরও দু’জন। জাহিরুলের দাবি, আলি কুলি নামে এক যুবক বেশী যাত্রী থাকা অবস্থ্যায় টোটোয় উঠতে চায়। তাতে রাজি না হওয়াই মারধর শুরু করে। পরে পূর্বস্থলী থানায় লিখিত অভিযোগও করেন ওই চালক। পুলিশ দুটি ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।