গ্রামের রাস্তায় ট্রাক্টরের যাতায়াতকে ঘিরে ঝামেলা বেধেছিল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। বচসা থেকে মারামারি, বোমাবাজি হয়। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় বিল্লাল শেখ (২৯) নামে এক তৃণমূল সমর্থকের। আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ভাতারের রাজিপুর গ্রামের একটি রাস্তা দিয়ে মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের যাতায়াত নিয়ে দু’দল লোকের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। গ্রামেরই বদরে আলম নামে এক ব্যক্তির বাড়ির পাশ দিয়ে ঘন ঘন ট্রাক্টর চলাচল করায় তিনি আপত্তি করেন। অভিযোগ, তখন একদল লোক বোমা, টাঙি, বল্লম, কুড়ুল ইত্যাদি নিয়ে বদরে আলমের উপর চড়াও হন। বোমা, টাঙির আঘাতে বদরে আলম ছাড়াও দুলাল মল্লিক, বিল্লাল শেখ, শেখ সুর হকেরা আহত হন। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, আহতদের মধ্যে ছ’জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। আর বদরে আলম নামে এক তৃণমূল সমর্থককে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত দুলাল মল্লিকের স্ত্রী হাসনারা বিবি ও সুর হকের আত্মীয় ওমর আলির দাবি, “দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে রেষারেষি রয়েছে। সামান্য কারণে মাঝেমধ্যেই গোলমাল শুরু হয়ে যায়।” তাঁদের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার স্থানীয় তৃণমূল নেতা মানগোবিন্দ অধিকারীর অনুগামীরা ওই চারজনকে আক্রমন করে। তাঁদের বাঁচাতে এসে আহত হন আরও চারজন।” মৃতের ভাই সদরুল আলমেরও দাবি, “আহতেরা ভাতারের বিধায়ক বনমালি হাজরার অনুগামী। মানগোবিন্দবাবুর লোকেরাই এদের আক্রমন করেছিল।” এই ঘটনায় এলাকারই জাকির শেখ, বদর শেখ, কদর শেখ-সহ প্রায় ৬ জন জড়িত বলেও তাঁর অভিযোগ।
যদিও দুই নেতার কেউই তাঁদের গোষ্ঠীর কারও জড়িত থাকার কথা মানতে চাননি। ভাতারের তৃণমূল নেতা তথা ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দবাবুর দাবি, “যাদের মধ্যে গোলমাল হয়েছে তারা সকলেই তৃণমূল করেন। গ্রামের একটি রাস্তা আটকে দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের ঝামেলা বাধে। তাতেই বোমাবাজি হয়। এতে আমার লোকেরা জড়িত বলে জানা নেই।”
ভাতারের বিধায়ক বনমালি হাজরাও তাঁর লোকেদের মানগোবিন্দবাবুর লোকেরা আক্রমন করেছেন বলে মানতে চাননি। তিনি বলেন, “দু’পক্ষই তৃণমূল সমর্থক। তবে এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। ওখানে একটি পুকুরকে কেন্দ্র করে দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে একজনের মৃত্যু হয়। এটাই মর্মান্তিক।”
আহত ভাতারের রাজিপুর গ্রামের বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।