প্রহৃত ঠিকাদার শঙ্কর সিংহ যাদব।—নিজস্ব চিত্র।
ফের শিল্পসংস্থায় মারধর ও তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের এক নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি দুর্গাপুরের। শঙ্কর সিংহ যাদব নামে ওই ঠিকাদারের দাবি, দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের (ডিটিপিএস) আইএনটিটিইউসি নেতা গোরাচাঁদ বুট তাঁকে টাকার জন্য হুমকি দেন, মারধরও করেন।
ঘটনাটি গত ৬ অক্টোবরের। আর রবিবার বিকেলে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব)-এর দফতরে ওই নেতা-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন শঙ্করবাবু। বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সংগঠন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।”
আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও জামুড়িয়ায় এক স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় ঠিকাদারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। অন্ডালের সিএল জামবাদ খনিতেও তোলা না পেয়ে এক ঠিকাদারকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের কেদার পাল নামে এক শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে।
শঙ্করবাবু জানিয়েছেন, ৫ সেপ্টেম্বর এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়ে তিনি দেখেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে ৩ লক্ষ ৪১ হাজার ৮০০ টাকা জমা পড়েছে। কোনও বকেয়া টাকা জমা পড়েছে, ভেবেছিলেন তিনি। এর পরে ছত্তীসগঢ়ে চলে যান তিনি। ১৬ সেপ্টেম্বর এক ঠিকাদার ফোন করে শঙ্করবাবুকে বলেন, ডিটিপিএস ভুল করে তাঁর টাকা শঙ্করবাবুর অ্যাকাউন্টে জমা করেছে। শঙ্করবাবু যেন টাকা ফেরত দেন। শঙ্করবাবু জানান, তিনি ডিটিপিএসকেই টাকা ফেরত দেবেন। এর পর থেেই গোরাচাঁদ বুট নামে ওই নেতা ফোন করে হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ।
লিখিত অভিযোগে শঙ্করবাবু দাবি করেছেন, ৫ অক্টোবর গোরাচাঁদের দলবল তাঁর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে হুমকি দেয়। পরের দিন গাঁধী মোড় থেকে তাদেরই এক জন জোর করে তাঁকে মোটরবাইকে তুলে ডিটিপিএসের কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে গোরাচাঁদও ছিলেন। তাঁকে গালিগালাজ, মারধর করা হয়। শঙ্করবাবু বলেন, “গোরাচাঁদরা আমার ছেলেকে খবর পাঠায়। ছেলে এলে ওকেও মারধর করে।” এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ছেলে টাকা এনে দিলে ছাড়া পান তিনি। অভিযুক্ত গোরাচাঁদের দাবি, যাঁর টাকা শঙ্করবাবুর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে, তিনি তাঁর পরিচিত। ডিটিপিএসের যে কর্মীর ভুলে এমন হয়েছে, ধরা পড়লে তাঁর চাকরি যেতে পারে। তাই তিনি মধ্যস্থতা করেছেন। তিনি বলেন, “মারধর বা চাপ দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।”