ঠান্ডা-গরমে আশঙ্কা পেঁয়াজে

কোথাও চাষের মাঝপথে পেঁয়াজ গাছের পাতা শুকিয়ে গিয়েছে, কোথাও আবার গাছের বৃদ্ধি হয়নি প্রত্যাশামতো। কালনা মহকুমার প্রায় সর্বত্রই পেঁয়াজ চাষের ছবিটা এমন বলেই দাবি কৃষকেরা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জেরেই প্রভাব পড়ছে পেঁয়াজ চাষে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:০৫
Share:

পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত চাষিরা। কালনায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

কোথাও চাষের মাঝপথে পেঁয়াজ গাছের পাতা শুকিয়ে গিয়েছে, কোথাও আবার গাছের বৃদ্ধি হয়নি প্রত্যাশামতো। কালনা মহকুমার প্রায় সর্বত্রই পেঁয়াজ চাষের ছবিটা এমন বলেই দাবি কৃষকেরা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জেরেই প্রভাব পড়ছে পেঁয়াজ চাষে।

Advertisement

রাজ্যে হুগলির পর বর্ধমান জেলাতেই সবথেকে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার শীতকালীন পেঁয়াজের ৯০ শতাংশ চাষই হয় কালনা মহকুমায়। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এই মহকুমার প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। এখানে মূলত সুখসাগর প্রজাতির পেঁয়াজ চাষ করেন চাষিরা। গত বছর অগস্টের অতিবৃষ্টি ও বন্যার জেরে এমনিতেই মাস খানেক দেরিতে শুরু হয়েছে শীতকালীন পেঁয়াজের চাষ। মহকুমার বেশির ভাগ জায়গাতেই এখন পেঁয়াজ চারার গড় বয়স দেড় থেকে দু’মাস। চাষিরা জানান, সপ্তাহখানেক ধরে চড়া রোদ উঠছে। আবার তার আগেই মেঘলা, কুয়াশা চলছিল। তার উপর চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ঠান্ডাও নেই। এর জেরে অধিকাংশ জায়গাতেই পেঁয়াজ গাছের পাতার উপরের অংশ শুকিয়ে যাচ্ছে। গাছের বৃদ্ধি ঝিমিয়ে পড়েছে বলেও তাঁদের দাবি। কালনার নান্দাই এলাকার চাষি আকবর শেখ এই মরসুমে প্রায় ৫ বিঘে জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘গাছের ওপরের অংশ হলুদ হয়ে যাচ্ছে। ওষুধ স্প্রে করে বা রাসায়নিক সার দিয়েও ফল মিলছে না।’’ পূর্বস্থলীর চাষি মানিক ঘোষের আশঙ্কা, ‘‘এর জেরে পেঁয়াজের ফলনে প্রভাব পড়তে পারে।’’

কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে মূলত তিনটি কারণে পেঁয়াজ চাষে এই উপসর্গগুলি দেখা যায়। এক, মাটিতে পটাশ ও জিঙ্কের ঘাটতি হলে এমনটা হতে পারে। দুই, গাছের চারায় ছত্রাকের আক্রমণ ঘটলে এবং তিন, অনুখাদ্যঘটিত সমস্যার হলে চাষে প্রভাব পড়ে। মহকুমা কৃষি দফতরের সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘ঝলমলে আবহাওয়া না থাকায় পেঁয়াজ ও আলু গাছ ঠিকমতো খাবার তৈরি করতে পারে না। ব্যহত হচ্ছে গাছের বৃদ্ধিও।’’ তবে কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, পটাসিয়াম সালফেট লিটার প্রতি পাঁচ গ্রাম করে স্প্রে করলে ভাল ফল মিলতে পারে। এছাড়া মেটালক্সিল ও ম্যাঙ্কোজেব জাতীয় ওষুধও দু’গ্রাম জলে মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে। তবে প্রতিবার স্প্রে করার আগে ওষুধের সাথে আঠা মেশানো দরকার বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

তবে শেষমেশ সমস্যা থেকে না বেরতে পারা পর্যন্ত আশঙ্কা যাচ্ছে না কালনার পেঁয়াজচাষিদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন