ডাক দিচ্ছে পক্ষীরাজ, রূপকথার খোঁজ মণ্ডপে

কোথাও খুদেদের কথা ভেবে চাঁদমামার দেশ। কোথাও বাজার অর্থনীতি। কোথাও বা সমুদ্রে সূর্যোদয়। শহরের তিন বড় পুজো এ বার পাল্লা দিতে নেমেছে এই সব হাতিয়ার করেই।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩০
Share:

বাঁ দিকে, উর্বশী সর্বজনীনের মণ্ডপ। মাঝে, মার্কনি দক্ষিণপল্লির পুজোয় সূর্যোদয়। ডান দিকে, ফুলঝোড়ে চাঁদমামার দেশ। ছবিগুলি তুলেছেন বিকাশ মশান ও সব্যসাচী ইসলাম।

কোথাও খুদেদের কথা ভেবে চাঁদমামার দেশ। কোথাও বাজার অর্থনীতি। কোথাও বা সমুদ্রে সূর্যোদয়। শহরের তিন বড় পুজো এ বার পাল্লা দিতে নেমেছে এই সব হাতিয়ার করেই।

Advertisement

ফুলঝোড় সর্বজনীনের পুজো ২৩ বছরে পা দিল। এ বারের থিম ‘নিমন্ত্রণ চাঁদমামার দেশে’। মণ্ডপ যেখানে হয় তার সামনেই একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। কাঁধে বইয়ের বোঝা নিয়ে খুদেরা স্কুলে ঢোকে। অনেকেই যেতে চায় না, কান্নাকাটি করে। তাদের কথা ভেবেই এ বারের থিম নির্বাচন বলে জানান উদ্যোক্তারা। ১১৭ রকম সামগ্রী দিয়ে গড়া হচ্ছে মণ্ডপ। চাঁদমামার দেশে পক্ষীরাজের ঘোড়া, পরী, পাখি ডাক দিচ্ছে খুদেদের। পুজো কমিটির পক্ষে শ্যামল রায় জানান, কলকাতার শিল্পী মাধব গঙ্গোপাধ্যায় মণ্ডপ গড়ছেন। মণ্ডপের সঙ্গে সাজুয্য রেখে প্রতিমা গড়া হচ্ছে। দেবীর এক হাতে থাকছে অস্ত্র। বাকি হাতগুলিতে চকোলেট জাতীয় জিনিস। শ্যামলবাবু বলেন, “আশা করি খুদেদের মণ্ডপ দেখাতে নিয়ে এসে উপভোগ করবেন বড়রাও।”

মার্কনি দক্ষিণপল্লি সর্বজনীন পুজোর এ বার ৫৪ বছর। গত বছরের থিম ছিল রবীন্দ্রনাথের তাসের দেশ। গত পুজোর শেষে উদ্যোক্তারা বসেছিলেন পরের বার কী করা হবে তা ঠিক করতে। তখনই ঠিক হয়, তুলে ধরা হবে সমুদ্রে সুর্যোদয়ের দৃশ্য। কাঁথির শিল্পী সুতনু মাইতি মণ্ডপ গড়ছেন বেশ কিছুদিন ধরে। মশারির নেটের উপরে দেওয়াল পট্টি দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে মণ্ডপ। সমুদ্রের ঢেউয়ের মাঝে সুর্যোদয় দেখতে দর্শনার্থীরা গত বারের মতোই ভিড় করবেন বলে আশায় উদ্যোক্তারা। আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর দর্শন, কৃষ্ণলীলা প্রভৃতি। পুজো উদ্বোধন করবেন শিল্পী নচিকেতা। কমিটির পক্ষে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বছরের পর বছর তাঁদের পুজো শহরের সেরার সম্মান পেয়ে এসেছে। এ বারও তেমন ফলই প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।

Advertisement

সিটি সেন্টারের বেঙ্গল অম্বুজার উর্বশী সর্বজনীনের এ বছর একাদশ তম বর্ষ। এ বারের থিম, ‘হারিয়ে খোঁজা’। বাজার অর্থনীতির হাত ধরে জীবনে এসেছে বহু পরিবর্তন। মাটির বাড়ি, অরণ্য ধ্বংস করে গড়ে উঠছে শপিংমল, বহুতল। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো সব। সেই পুরনোকে মনে করিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে এই পুজো কমিটি। কাঁথির শিল্পী চঞ্চল আচার্য মণ্ডপ গড়ছেন। পঞ্চমীতে পুজো উদ্বোধন করবেন সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রাণী সেন। প্রতিবন্ধী দর্শনার্থীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন সে কথা ভেবে হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা থাকছে মণ্ডপে। প্রাথমিক চিকিৎসার শিবিরও রাখছেন উদ্যোক্তারা। অষ্টমী ও নবমীর দুপুরে বরাবরের মতো থাকছে ‘কমিউনিটি ফিস্ট’। পুজো কমিটির সভাপতি দুলালকুমার মিত্র বলেন, “তুলনায় আমরা হয়তো নবীন। কিন্তু অল্প সময়ে সাড়া ফেলেছি। আশা করছি, এ বারও সেই ধারা বজায় রাখতে পারব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন